Friday, July 18, 2025

হাসিনা নয়, জানা গেল গোপালগঞ্জে হামলার নেপথ্যে যিনি!

আরও পড়ুন

গোপালগঞ্জে গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে কেন্দ্রে করে যে হামলা চালানো হয় তার পেছনে শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এনসিপির বিরুদ্ধে সবাইকে উসকে দিতে তিনি বেশকিছু অডিও বার্তা পাঠান বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ফেসবুক লাইভে এসে সরাসরি হামলার নির্দেশনা দেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সভাপতি পলাতক সাদ্দাম হোসেন। যুগান্তর পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের কাছে শেখ হাসিনা একটি অডিও বার্তা পাঠান, যা যুগান্তরের কাছে এসেছে। বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ওরা (এনসিপি) নাকি গোপালগঞ্জে যাচ্ছে। টুঙ্গিপাড়ায় আমার বাবার কবর ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এবার টুঙ্গিপাড়ায় হামলা চালাবে। তোমরা বসে আছ কেন? যে যেভাবে পার প্রতিহত কর। গোপালগঞ্জে কোনোভাবেই যাতে ওরা ঢুকতে না পারে। কোনো ধরনের কর্মসূচি যাতে করতে না পারে। মনে রাখবা, গোপালগঞ্জের মাটি থেকে ওদের কেউ যাতে অক্ষত অবস্থায় ফিরে যেতে না পারে।

আরও পড়ুনঃ  গোপালগঞ্জে নিহতদের ছবিতে নিজের মুখ, ক্ষুব্ধ জুলাইযোদ্ধা

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও শহরের বেদ গ্রামের বাসিন্দা নিউটন মোল্লাকে শেখ হাসিনা অডিও বার্তায় বলেন, তোমরা ওখানে (গোপালগঞ্জে) বসে কী কর। ওরা (এনসিপি) বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন জড়ো করার চেষ্টা করছে। পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা ও ফরিদপুরসহ আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে লোকজন একত্রিত করে গোপালগঞ্জে ঢুকবে। এরপর টুঙ্গিপাড়ায় যাবে। যেভাবে পার ওদের প্রতিহত করতে হবে। টুঙ্গিপাড়ায় যাতে কোনোভাবেই ওরা ঢুকতে না পারে। আর যদি টুঙ্গিপাড়ায় ঢুকেই পড়ে, তাহলে একজনও যাতে জীবিত অবস্থায় ওখান থেকে ফিরে যেতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

যুগান্তরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পরদিন গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক মাঠে এনসিপির কর্মসূচির দিন সকালে নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বেই স্থানীয় চর দুর্গাপুর এলাকায় পুলিশের গাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে এনসিপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার বিষয়টি এলাকায় জানান দেয় আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শহরের মোহাম্মদপাড়ার বাসিন্দা এই আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বেই পরে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে কয়েক দফা গুলি ও বোমা হামলা চালানো হয়।

আরও পড়ুনঃ  ১০ হাজার বাস রিজার্ভ এর পর এবার ভাড়া করলো ৩ জোড়া ট্রেন, লক্ষ্য ইতিহাস গড়া!

প্রতিবেদনে বলা হয়, কেবল নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগই নয়, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার টেলিফোনে কথা বলেন। গোপালগঞ্জের মাটিতে এনসিপি যাতে কোনোভাবেই তাদের কর্মসূচি পালন করতে না পারে, সে জন্য প্রত্যেককে তিনি নির্দেশনা দেন। শেখ হাসিনার নির্দেশের পর এনসিপির কর্মসূচি পণ্ড করাসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে গোপালগঞ্জে থাকা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা চতুর্দিক থেকে একযোগে হামলা চালান।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, নেতাকর্মীদের সমন্বয় করেন কলকাতায় থাকা শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লন্ডনে বসে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য আব্দুর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ইকবাল হোসেন অপু এবং গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম কাজল। তাদের বাইরে গোপালগঞ্জসহ আশপাশের জেলা-উপজেলায় আত্মগোপনে থাকা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। কলকাতায় আত্মগোপনে থেকেই ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি মাঠের কর্মীদের এনসিপির কর্মসূচিতে হামলা করতে নির্দেশনা দেন।

আরও পড়ুনঃ  দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকতে বললেন সাদিক কায়েম

এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে নারীদের এ কাজে সংগঠিত করেন কলকাতায় আত্মগোপনে থাকা গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম কাজলের স্ত্রী ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ইয়াসমিন আলম।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ