পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে প্রশাসনিক ও একাডেমিক নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে তারা। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচী পালন করে তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো- রেজাল্ট ৩ মাসের মধ্যে গ্রেড ও মার্কসহ প্রকাশ করতে হবে, ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নিতে হবে, অযৌক্তিক রিটেক ফি কমাতে হবে, নতুন নিয়ম জারি করার আগে কলেজগুলোকে অবহিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বুটেক্সের অধীনে পরিচালিত টেক্সটাইল কলেজগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ‘ইয়ার ড্রপ’ নামক একটি অবিচারমূলক সিস্টেম চলছে। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রায় ৬ মাস পর ফল প্রকাশ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষার ১৫-২০ দিন আগে ছাত্ররা জানতে পারে, তারা ‘রিটেক’ বা ‘ইয়ার ড্রপে’ পড়েছে যা একাডেমিক ও মানসিকভাবে তাদের চরমভাবে বিপর্যস্ত করছে।
আন্দোলনে ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত মিয়া বলেন, আমি প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিয়েও পরে জানতে পারি আমি ইয়ার ড্রপে পড়েছি। পরবর্তী ব্যাচের সাথেও পরীক্ষায় অংশ নেই, কিন্তু ফলাফল পুনরায় নেতিবাচক আসে। কলেজ প্রশাসন কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা দিতে না পারায় বুটেক্সে যাই। সেখানে ভুয়া মার্কশিট দেখানো হয় এবং প্রতিবাদ করায় হুমকির সম্মুখীন হই। বর্তমানে আমি ২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস করছি।
একই সেশনের আরেক শিক্ষার্থী উৎপল চন্দ্রও আন্দোলনে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি জানান, সেমিস্টার ফাইনালের ১৭ দিন আগে তাঁকে জানানো হয়, তিনি লেভেল-১ এ ৫টি বিষয়ে ফেল করেছেন। অথচ ফলাফল বা বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। পরবর্তী ব্যাচে রিটেক দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে তাঁকে নতুন সেশনের সঙ্গে শুরু করতে বলা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের কাছে সমস্যাগুলোর কথা জানিয়ে আসছিলেন। বারবার আশ্বাস মিললেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন এবং সেমিস্টার ফাইনাল, ক্লাস টেস্ট, ল্যাবসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।