ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি আগামী ৩০ আগস্ট প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসছেন। এটি হবে পশ্চিমা বিশ্বের কোনো শীর্ষ নেতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বাংলাদেশ সফরের প্রথম উদাহরণ। সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বৈধ অভিবাসন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং নিরাপত্তা সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী মেলোনি ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছাবেন এবং ৩১ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। একইদিনে তার সম্মানে একান্ত বৈঠক ও মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন থাকবে। আলোচনা শেষে সেদিনই তার ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
রবিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সফরের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।
সফরের আলোচ্যসূচিতে যেসব বিষয় গুরুত্ব পাবে, তার মধ্যে রয়েছে:
অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ ও বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধি
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ
নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা
প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যৌথ উদ্যোগ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মে মাসে ইতালি ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি’ সমঝোতা স্মারক এই আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে। এর মাধ্যমে ইতালি বৈধ পথে বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে।
ইতালি আগামী তিন বছরে প্রায় ৫ লাখ বিদেশি কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশ চায়, এই কর্মীদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশ থেকে যাক। এ নিয়ে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
বর্তমানে ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্যসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি রয়েছে। ইতালি বাংলাদেশে প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগে আগ্রহী বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।
সফরকালে দুই দেশের মধ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। এতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর শুধু রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক, শ্রমবাজার ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিক থেকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্কের একটি নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে।