Monday, July 21, 2025

মাইলস্টোনে আহাজারি: ‘মিস আমার বাচ্চা কই’

আরও পড়ুন

একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ছুটে চলছে সাইরেন বাজিয়ে, সেগুলোকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সামরিক যান। বাশি ফুঁয়ে ভিড় সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এর মাঝেই এক নারী চিৎকার করতে করতে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। ফোনের ওপাশে ব্যক্তিকে কাঁদতে কাঁদতে বার বার জিজ্ঞেস করছেন ‘মিস আমার বাচ্চা কই’।

ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই দগ্ধ বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সন্তানের খোঁজে অভিভাবক ও স্বজনরা ছুটে আসেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। মোবাইল ফোনে শিক্ষকের কাছে সন্তানের খোঁজ করা ওই নারী তাদেরই একজন।

আরও পড়ুনঃ  উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: পাইলট কে নিয়ে সর্বশেষ যা জানা গেলো

তিনি যখন চিৎকার করে কাঁদছিলেন তখন স্কুল ফটকে জড়ো হওয়া স্থানীয়রা তার সন্তানের এবং ক্লাসের নাম জানতে চান।

তিনি বলেছেন তার ছেলের নাম সাজ্জাদ সাদী, ছেলেটি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সেখানে উপস্থিত একজন এই অভিভাবককে আশ্বস্ত করে বলেন, “আপা একদম চিন্তা করবেন না। ক্লাস টেনের বাচ্চাদের কিছুই হয়নি। আমরা ভেতরে গিয়েছিলাম। ক্লাস ফোর আর ক্লাস ফাইভের বাচ্চারাই মূলত বেশি হতাহত হয়েছে।”

ওই অভিভাবক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলের প্রিটেস্ট পরীক্ষা চলছে। ওর কাছে ফোন নেই, এতটা সময় হয়ে গেল কিন্তু ও কোনো খবরও দেয়নি। আমি কোনোরকমে এসেছি। ওর ক্লাস টিচারকে ফোন করেছি তিনি কিছু জানেন না। ওর মিসরাও কোন খবর দিতে পারেননি।”

আরও পড়ুনঃ  ১ বছর আগে বিয়ে করেন বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট তৌকির

সাদীর মায়ের মত তানিয়া আহমেদ নামের আরো এক অভিভাবক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন তার মেয়ে রাইসা আহমেদ উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী। তার খোঁজ তিনি পাচ্ছেন না।

আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর জানিয়েছে, সোমবার বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। উড়োজাহাজটির আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমানটি একটি ভবনের গেইটে আছড়ে পড়ে। সেটি অ্যাকাডেমিক ভবন। সেখানে স্কুলের বাচ্চাদের ক্লাস চলছিল। একের পর এক আহতদের বের করে নিয়ে আসা হচ্ছে।”

আরও পড়ুনঃ  মসজিদের কক্ষ থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার: ধর্ষণের পর হত্যার আশঙ্কা

দুর্ঘটনাস্থল থেকে অনেককে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। সেখানে উদ্ধার তৎপরতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যোগ দিয়েছে ২ প্লাটুন বিজিবি।

আহতদের ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও আহতদের নেওয়া হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান বেলা সাড়ে ৩টায় বলেন, “এখন পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক এসেছে। আমরা খুব ব্যস্ত আছি।

“আহতের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। দগ্ধদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।”

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ