দীর্ঘদিন ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি রাশিয়াকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ইউক্রেনে নতুন করে অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সাথে, রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপের হুমকিও দেন তিনি। যা রাশিয়ার যুদ্ধ চালানোর সক্ষমতায় বড় আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
এর মধ্যেই সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। হাতে পাওয়া চুক্তিপত্র, চালান এবং শুল্ক নথি থেকে জানা গেছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই চীন থেকে গোপনে কুলিং মেশিনের নামে রাশিয়ায় রপ্তানি হচ্ছে বিশেষ ধরনের ইঞ্জিন, যা ইউক্রেনে হামলাকারী রুশ ‘গারপিয়া-এ১’ ড্রোন তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইউরোপের ৩টি নিরাপত্তা সংস্থা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই গোপন সরবরাহ চক্রের মাধ্যমে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত অস্ত্র নির্মাতা সংস্থা ‘IEMZ Kupol’ গারপিয়া ড্রোনের উৎপাদন তিনগুণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। গত বছর যেখানে ২ হাজার ড্রোন তৈরি হয়েছিল, চলতি বছর তাদের লক্ষ্য ৬ হাজার।
জানা গেছে, এপ্রিলের মধ্যেই নাকি দেড় হাজারের বেশি ড্রোন তৈরির যন্ত্র পাঠানো হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক-বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালাতে প্রতি মাসে প্রায় ৫০০ গারপিয়া ড্রোন ব্যবহার করে মস্কো। এর আগে গারপিয়া ড্রোনে চীনের ‘জিয়ামেন লিম্বাচ এভিয়েশন ইঞ্জিন কোং’-এর তৈরি L550E ইঞ্জিন ব্যবহারের খবর প্রকাশ্যে আসার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
কিন্তু নতুন তথ্য অনুযায়ী, ‘বেইজিং জিচাও আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ও বাণিজ্য’ নামের আরেকটি চীনা প্রতিষ্ঠান ‘SMP-138’ নামের একটি রুশ ফ্রন্ট কোম্পানির মাধ্যমে সেই একই ইঞ্জিন দিচ্ছে। এরপর ‘এলআইবিএসএস’ নামে দ্বিতীয় একটি রুশ প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে সেগুলো কুপলের কারখানায় পৌঁছাচ্ছে।
চুক্তিপত্রে এই ইঞ্জিনগুলোকে ‘শিল্প শীতলীকরণ যন্ত্র’ বা ‘industrial refrigeration units’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে চীনা কর্তৃপক্ষ সন্দেহ না করে। উল্লেখ্য, গারপিয়া-এ১ ড্রোনটি ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোনের অনুকরণে তৈরি হলেও এটি আসলে সম্পূর্ণরূপে চীনের প্রযুক্তিনির্ভর।