সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যায়, এক নারী ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় তার সন্তানকে নিয়ে একটি সেনানিবাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আর কান্না করছেন। তার পাশে থাকা ছেট্ট শিশু ছেলেটি কান্না বিজড়িত কন্ঠে চিৎকার করে এক আর্মি অফিসারকে বলছেন, ‘তুমি ভালো না অনেক খারাপ, আমার মায়ের সাথে খুব বাজে আচরণ করেছো।’ এরপর তাদের সান্তনা দেওয়ার জন্য ওখানে এগিয়ে আসেন এক ব্যক্তি আর ভিডিও করতে থাকেন। তিনি বলতে থাকেন ভয়ের কিছু নেই। এরপর তিনি এই নারীকে জিজ্ঞেস করেন, কি হয়েছিলো তখন সেই নারী বর্ণনা দেন ভারতীয় আর্মি অফিসারদের দ্বারা ধর্ষণের লোমহর্ষক ঘটনা।
এই নারী বলেন, ‘হাসপাতালে আমার রুমে ছিলাম, এই অফিসাররা তখন সেখানে আসে।’ এরপর সেই ব্যক্তি জানতে চান কারা তারা, তখন গণধর্ষণের শিকার সেই নারী উত্তর দেন, ব্রিগিডিয়ার, একজন কমান্ডার আর আরও কয়েকজন, তারা সবাই ৪০ সিগন্যাল রেজিম্যান্টের বলেও দাবি করেন তিনি। এই অফিসাররা রুমে ঢুকে পড়ার পর রুমের দরজা লাগিয়ে দেন এবং তার মোবাইল কেঁড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন বলেও দাবি করেন তিনি। এই ভিডিওটি মুহুর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। যদিও ভারতীয় কোন গণমাধ্যমই বিষয়টিকে ফোকাস করেনি। এমনকি তারা সংবাদও প্রকাশ করেনি।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার এই নারী একজন কর্নেল এর স্ত্রী এমনটিই জানা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই কর্নেলের আরেক বক্তব্য থেকে। তার নাম কর্নেল অমিত কুমার। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে জেনারেলরা ধর্ষণ করেছে আর তারা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’ এসময় তিনি অভিযোগ করেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা তার স্ত্রীকে ধর্ষণ ও লাঞ্ছিত করেছেন। কোন এফআইআর নেই, কোন গ্রেপ্তার নেই কেবল একটি ক্লিন চিট। ভিডিও আছে, কিন্তু ব্যবস্থা নীরব। এভাবেই ভারত সরকারের দিকেও অভিযোগের তীর ছোড়েন তিনি।
ভারতীয় আর্মি অফিসারদের দ্বারা গণধর্ষণ বা ধর্ষণের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। বরং এর আগে কাশ্মীরি মুসলিম নারীদের ওপরও তাদের চালানো পাষবিক নির্যাতন আর গণধর্ষণের খবর পাওয়া যায়। শুধুই কি কাশ্মীর? মনিপুরেও আন্দোলনের উত্তপ্ত পরিস্থিতির সময় ভারতীয় সেনারা সেই অঞ্চলের নারীদের ধর্ষণ করেছেন এমন অভিযোগও প্রকাশ্যে। তবে এবার একজন ব্রিগেডিয়ারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিজ বাহিনীরই আরেক অফিসারের ওয়াইফকে গণধর্ষণের বিষয়টি যেনো নাড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় জাতির বিবেক আর অবাক করেছে পুরো বিশ্বকে।
যদিও সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো ভারতীয় গোদি মিডিয়াগুলো সন্তানের সামনেই মাকে ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে কোন সংবাদ প্রকাশ করেনি। শিক্ষিত সব আর্মি অফিসার যাদের রক্ষা করার কথা দেশ তারাই কি না সন্তানের সামনে মাকে গণধর্ষণের মত নেক্কারজনক ঘটনা ঘটালো! এই সন্তানের কি হবে? তার মানষিক অবস্থা কতটা বিপর্যয় আর ভয়বহতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে উদ্বেগ জানাতে দেখা যায় স্বয়ং ভারতীয় নেটিজেনদের।
শিশু সন্তানের সামনে ভারতীয় আর্মি অফিসারদের দ্বারা তার মাকে গণধর্ষণের ঘটনায় রীতিমতো কম্পনের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের বুকে। কট্টর হিন্দুত্ববাদী গণহত্যাকারী নরেন্দ্র মেদির দেশে আদৌ এই ঘটনার বিচার হবে কি না সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।