মাঝ আকাশে ভয়াবহ এক বিমান দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে। আকাশপথে চলার সময় যাত্রীবাহী বিমানের পাইলট হঠাৎ খেয়াল করেন সামনে অন্য আরেকটি বিমান চলে আসছে। মুখোমুখি সংঘর্ষের শঙ্কায় মুহূর্তে বিমানকে কয়েকশ ফুট নিচে নামিয়ে আনেন তিনি।
আকস্মিক এই ‘ডুব’ দেওয়ার ঘটনায় বিমানের ভেতর তীব্র ঝাঁকুনি সৃষ্টি হয় এবং যাত্রীরা আসন থেকে ছিটকে পড়েন। এতে দুজন কেবিন ক্রু আহত হলেও কোনো যাত্রী গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হননি বলে জানিয়েছে বিমান সংস্থাটি।
এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে, যা ক্যালিফোর্নিয়ার বুরব্যাংক শহর থেকে উড্ডয়ন করে লাস ভেগাসের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরই আকাশে আরেকটি বিমানের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে সংঘর্ষ এড়াতে পাইলট দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখান এবং বিমানটি নিচে নামিয়ে আনেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও যাত্রীদের মধ্যে একজন ছিলেন মার্কিন কমেডিয়ান জিমি ডোর। তিনি মাইক্রোব্লগিং সাইট ‘এক্স’-এ এক পোস্টে লেখেন, ‘বিমানটি হঠাৎ নিচে নামায় অনেক যাত্রী আসন থেকে ছিটকে যান। কেউ কেউ ছাদে আঘাত পান। পরিস্থিতি ছিল আতঙ্কজনক।’
সাউথইস্ট এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানায়, বিমানটিতে থাকা ক্রুরা অনবোর্ড ট্রাফিক কলিশন এলার্ট সিস্টেম (টিসিএএস) থেকে সতর্কবার্তা পান। এতে পরামর্শ দেওয়া হয়, দ্রুত উচ্চতা পরিবর্তন করতে হবে- উঁচুতে উঠা অথবা নিচে নামা। ওই নির্দেশনা অনুসরণ করে পাইলট তাৎক্ষণিকভাবে বিমান নিচে নামিয়ে আনেন এবং পরে বিমানটি নিরাপদেই লাস ভেগাসে অবতরণ করে।
মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ইতোমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটঅ্যাওয়ার’-এর তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে সেই আকাশপথে একটি হকার হান্টার এমকে-৫৮ নামের যুদ্ধবিমানও ছিল, যা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই যুদ্ধবিমানটির উপস্থিতির কারণেই সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি ছিল একটি নিখুঁত উদাহরণ যে কিভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ পাইলটদের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত একটি সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে পারে।