চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ সীমান্তের পদ্মা নদী থেকে অ্যাসিডে পোড়ানো সফিকুল ইসলাম সফিক ও সেলিম নামে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে সফিকের ও বিকেলে সেলিমের মরদেহ উদ্বার করে পুলিশ। পাঁকা ইউনিয়নের বাতাসি মোড় এলাকার পদ্মা নদী থেকে ভারত থেকে ভেসে আসা মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সফিক (৪৫) শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর হঠাৎপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সেরাজুল ইসলামের ছেলে ও একই গ্রামের মর্ত্তুজার ছেলে সেলিম (৩৫)।
মরদেহ উদ্বারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জানান, দুপুরে ও বিকেলে স্থানীয়রা মরদেহ দেখতে পেলে মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিহতদের পরিবার বিজিবির সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করেনি। সীমান্ত পিলার ৪/২ এস থেকে আনুমানিক আড়াই কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় বিজিবি।
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে গরু আনার জন্য ভারতে যান একটি চোরাকারবারি চক্র। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তারা। শনিবার নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা খবর দিলে মরদেহ সনাক্ত করা হয়। তবে দুজনেরই পুরো শরীর ছিল অ্যাসিড দিয়ে পোড়ানো। আরও কয়েকজন নিখোঁজ থাকতে পারে বলে জানায় তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ সদস্যরা হত্যাকাণ্ডে কৌশল পরিবর্তন করে অপরাধ ঢাকতে নির্যাতন করে মৃত্যু নিশ্চিতের পর মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। নিহত শফিকুল ইসলাম সফিক ও সেলিম পদ্মা নদীতে মাছ ধরার পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত ছিল বলে জানান তারা।
নিহত শফিকুলের বোনের স্বামী ও স্থানীয় মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহা. সমির উদ্দীন বলেন, ‘নির্যাতনেই মৃত্যু হয়েছে শফিকুল ইসলামের। তার পুরো শরীরের অনেকগুলো ফোসকা রয়েছে। এগুলো অ্যাসিডে দগ্ধ হয়ে পোড়া ফোসকার মতো। এছাড়াও তার অনেকগুলো দাঁত ভাঙা ছিল।
নদী থেকে মরদেহ উদ্বারের কথা স্বীকার করেন শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া।
তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মরদেহ দুটি উদ্ধারের পর এনিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে গত সোমবার (২৮ জুলাই) চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনোহরপুর সীমান্ত দিয়ে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সৈয়বুর আলী। তিনি পাঁকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের ছেলে। এঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছে সঙ্গী রুহুল আলী।