Monday, August 4, 2025

ইরানে হামলা চালানো ইসরায়েলি পাইলটদের খুঁজে বের করছে তেহরান

আরও পড়ুন

ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় অংশগ্রহণ করা ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর পাইলট, কমান্ডার ও ড্রোন অপারেটরদের বিস্তারিত ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা—এমনটাই দাবি করেছে তেহরান।

শনিবার (২ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, জুন মাসে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘অপ্ররোচিত হামলায়’ অংশগ্রহণকারী বিমানবাহিনীর সদস্যদের পুরো প্রোফাইল এখন তাদের হাতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব বিমানসেনা ও কমান্ডারদের নাম-পরিচয়, তারা কোথায় থাকে, কোন ইউনিটে কাজ করে, কোন ঘাঁটি থেকে পরিচালনা করে সবকিছুই স্পষ্টভাবে জানা গেছে। এদের অতীত ‘অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড’ সম্পর্কেও নথি সংগ্রহ করেছেন ইরানি গোয়েন্দারা।

যদিও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ও টিভিতে এসব সেনার মুখ অস্পষ্ট করে দেখানো হয় এবং কঠোর নিরাপত্তা অনুসরণ করা হয়, তা সত্ত্বেও তেহরান এসব গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান।

আরও পড়ুনঃ  মাঝআকাশে ইঞ্জিন বিকল, ২১৯ যাত্রীবাহী এয়ারলাইনস থেকে মহাবিপর্যয় সংকেত

প্রতিবেদনে দুজন পাইলটের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হলেন- মেজর ইয়েল অ্যাশ, যিনি স্কোয়াড্রন ১১৯ (ব্যাট স্কোয়াড্রন)-এর ডেপুটি কমান্ডার এবং তার স্বামী বার প্রিন্স। ইয়েল অ্যাশ সম্পর্কে বলা হয়, তিনি ১৯৭৩ সালের ইয়োম কিপুর যুদ্ধে নিখোঁজ হওয়া ইসরায়েলি পাইলট মেজর শিমন অ্যাশের নাতনি।

ইরানের একটি চ্যানেল জানায়, শুধু পরিচয় নয়, এসব পাইলট ও কমান্ডারের বসবাসের সুনির্দিষ্ট স্থানও এখন ইরানি গোয়েন্দা চিত্রে ধরা পড়েছে। স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে তাদের বাড়ি ও চলাফেরার পথ পর্যন্ত নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে ইয়েল অ্যাশের এক সাক্ষাৎকারের কথা উল্লেখ করা হয়, যেখানে তিনি বলেছিলেন ‘সাধারণ ইসরায়েলিদের নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে চান।’ তবে চ্যানেলটি বলেছে, ‘আজ তিনি নিজেই আর নিরাপদ নন।’

আরও পড়ুনঃ  গাজায় এক মায়ের আর্তনাদ ‘আমার বাচ্চারা এক সপ্তাহ ধরে কিছু খায়নি’

ইরান জানিয়েছে, এই তথ্যভান্ডার ভবিষ্যতে প্রতিশোধমূলক হামলার ক্ষেত্রে তাদের জন্য কৌশলগত সুবিধা এনে দেবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের ওপর চলমান যুদ্ধের সময় ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলায় কয়েকজন পাইলটের বাড়িঘরে সরাসরি আঘাত হেনেছে।

এমন একটি হামলার পরিণতি তুলে ধরা হয় কেন্দ্রীয় ইসরায়েলি শহর ইয়াভনে-তে, যেখানে এক বিমানসেনার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ইরানি বাহিনী অন্তত ২২ দফা পাল্টা হামলা চালায়, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের পারমাণবিক, সামরিক ও শিল্প স্থাপনাগুলো। এই পাল্টা আঘাতেই ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করতে বাধ্য হয় বলে দাবি তেহরানের।

আরও পড়ুনঃ  গাজায় ইসরায়েলের হামলা নিয়ে গা শিউরে ওঠা তথ্য দিলেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েল তাদের এসব পাইলট ও সেনাকে ‘স্কুল’-এর মতো বেসামরিক স্থানে স্থানান্তর করে যেন ইরানকে পরে ‘বেসামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে’ অভিযুক্ত করা যায়। তবে ইরান বলছে, তারা এসব কৌশল বুঝতে পেরেছে।

সবশেষে ইরান জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত যা প্রকাশিত হয়েছে, তা শুধুই ‘একটি নমুনা’। ভবিষ্যতে আরও বহু গোপন তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে সতর্ক করেছে তারা। এই তথ্য ফাঁস ইসরায়েলি নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: পার্স নিউজ

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ