Sunday, August 10, 2025

হল কেন্দ্রিক নয়, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক ছাত্ররাজনীতি চায় শিবির: ফরহাদ

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে আমাদের কোনো রাজনৈতিক কমিটি নেই। শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে, তাদের মতামত নিয়েই আমরা কিছু সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করি।

শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি শিবিরের সভাপতি এ কথা বলেন।

ফরহাদ বলেন, শিবির হলভিত্তিক রাজনীতি নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক ছাত্ররাজনীতিতে বিশ্বাসী। বর্তমানে আমরা আবাসিক হলে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছি না। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী কিছু সেবামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

তিনি আরো বলেন, এসব কার্যক্রমের মধ্যে ছিল তীব্র গরমে হলে হলে পানির ফিল্টার সরবরাহ, স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন পরিচালনা, নববর্ষ উপলক্ষে উপহার বিতরণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ। এ কাজগুলো সম্পন্ন করতে কিছু আবাসিক শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে, যা নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে একটি মহল প্রচার চালাচ্ছে।

ফরহাদ বলেন, কিছু পক্ষ এমনভাবে প্রচার করছে যেন হলে হলে শিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। বাস্তবে, সেবামূলক কার্যক্রমের সুবিধার্থে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা যদি এসব সেবা না চান, তাহলে আমরা তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেব।

আরও পড়ুনঃ  কেন্দ্রীয় বাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি স্থগিত

ঢাবিতে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর হলভিত্তিক কমিটি নিয়ে আগে কোনো আপত্তি ওঠেনি, অথচ বর্তমানে অন্য দলের কমিটি নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে–এমন প্রশ্ন তুলে ফরহাদ বলেন, ‘শিবির দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, হলে রাজনীতি না হোক। আমরা চাই, হলের বাইরে শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় রাজনীতি করুক। অথচ বাম সংগঠনগুলো হলে কমিটি গঠন করলেও কেউ প্রশ্ন তোলে না, এখন কেন?’

এদিকে গতকাল মাস্টারদা সূর্য সেন হলে ছাত্রশিবিরের স্থাপন করা পানির ফিল্টার ভাঙচুর করেছে একদল শিক্ষার্থী। এছাড়া, রোকেয়া হলে দেওয়া শিবিরের ফিল্টার, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভেন্ডিং মেশিন ও ছাত্রদলের দেওয়া ডাস্টবিনও বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন হলটির শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুনঃ  যে ৭ দফা দাবিতে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ

পানির ফিল্টার স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি হলে শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে এবং হল প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমরা পানির ফিল্টারগুলো স্থাপন করেছিলাম। শিক্ষার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে সংগঠমের এলামনাইদের কাছ থেকে ফান্ড কালেক্ট করে আমরা তা উপহার হিসেবে দিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীরা যদি এখন সেগুলো ব্যবহার করতে আপত্তি জানায়- তাহলে আমরা সেগুলো সরিয়ে নেব।

শিবির সম্পর্কে উমামা ফাতেমার দেওয়া বক্তৃব্যকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ছাত্রশিবির তার নিজস্ব গঠনতন্ত্র ও নীতিমালা অনুযায়ী চলবে। কারও বিকৃত বা মনগড়া মতামতের ভিত্তিতে আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হবে না।

তিনি বলেন, শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেটকে ধারণ করে রাজনীতি করে, শিক্ষার্থীদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনীতি করে। শিবির তার সংবিধানে যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার বাইরে গিয়ে রাজনীতি করবে না।

এদিকে শুক্রবার মধ্যরাতে ঢাবির রোকেয়া হল থেকে তালা ভেঙে বেরিয়ে আসা শিক্ষার্থীরা হলে হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ‘হল পলিটিক্স নো মোর’, ‘শিক্ষা ও রাজনীতি একসাথে চলে না’- এমন স্লোগানে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুনঃ  চকরিয়ায় এনসিপির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন : হান্নান মাসউদ

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, হলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি সহিংসতা, গেস্টরুম সংস্কৃতি ও কৃত্রিম সিট সংকট সৃষ্টি করে একাডেমিক পরিবেশ ধ্বংস করছে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির উদাহরণ টেনে তারা হলের ভেতর রাজনীতির সম্পূর্ণ অবসান দাবি করেন।

বিক্ষোভের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান রাত ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের সামনে এসে জানান, গত বছরের ১৭ জুলাই হলে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা বহাল থাকবে। হল প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের ঘোষণায় সন্তুষ্ট না হয়ে পূর্ণাঙ্গ ‘নো হল পলিটিক্স’ বাস্তবায়নের দাবি জানায়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ