Sunday, August 10, 2025

হঠাৎ দাম কমলো ৩৩টি অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধের

আরও পড়ুন

১৪০টির মতো ওষুধ উৎপাদন করে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল)। প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত ৩৩টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম কমেছে।  সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য কমানো হয়েছে।  তালিকায় অতিপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক এবং নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর, উচ্চরক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, কৃমিনাশক, ব্যথানাশক, হাঁপানির ওষুধ ও ভিটামিন রয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন শাখা থেকে পাওয়া নথি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া আগামী সপ্তাহে আরও পাঁচটি ওষুধের দাম কমানো হতে পারে। প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম ওষুধের দাম কমানো হলো বলে ভাষ্য প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের।

এসেনসিয়াল ড্রাগসের ওষুধ নিবন্ধন খাতার তথ্য অনুযায়ী, অ্যাজমা বা হাঁপানি প্রতিরোধে মন্টিলুকাস্ট ট্যাবলেটের দাম পাঁচ টাকা করা হয়েছে। আগে এর মূল্য ছিল ১০ টাকা ৬৭ পয়সা। পাকস্থলীর এসিড নিঃসরণে ব্যবহৃত ওমিপ্রাজল ক্যাপসুলের দাম পাঁচ পয়সা কমে দুই টাকা ৭০ পয়সা, ব্যথা সারানোর ইনজেকশন কেটোরোলাক ভায়াল ৩০ থেকে কমে ২৩ টাকা হয়েছে। এমিটোজেনিক ক্যান্সার কেমোথেরাপির ক্ষেত্রে বমি প্রতিরোধী অনডানসেট্রন ইনজেকশন ভায়ালে কমেছে তিন টাকা, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে ব্যবহৃত সেফট্রিয়াক্সোন ইনজেকশনের দাম ১১৫ থেকে ৯০ টাকা করা হয়েছে। নিউমোনিয়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত সেফটাজিডিম ইনজেকশনের দাম কমিয়ে ১৫০ থেকে ১০০ টাকা এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধী সেফট্রিয়াক্সোন ইনজেকশন ১৭৫ থেকে ১৬০ টাকা করা হয়েছে। সেফুরোক্সিম ইনজেকশনে কমেছে ১০ টাকা। গ্যাস্ট্রিক এসিড নিঃসরণে ব্যবহৃত ইসোমিপ্রাজল ইনজেকশনের দামও ১০ টাকা কমেছে। মেরোপেনের দাম ৪৫০ থেকে ৩৪৩ টাকা করা হয়েছে। ওমিপ্রাজল ইনজেকশনের দাম ৬৪ থেকে কমিয়ে ৫২ টাকা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ব্রেকিং নিউজ: হঠাৎ জরুরি অবস্থা ঘোষণা!

এদিকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ক্লিনিকে তালিকাভুক্ত ৩২টি ওষুধের মধ্যে ২২টির দাম কমেছে। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ অ্যান্টাসিড ট্যাবলেটের দাম ৬৮ পয়সা, প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের দাম এক টাকা ১১ পয়সা এবং সালবিউটামল ট্যাবলেট ১৭ পয়সা করা হয়েছে। অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেটে কমেছে এক টাকা। ক্লোরামফেনিকল আই ড্রপ ও প্যারাসিটামল সাসপেনশনে তিন টাকা করে কমেছে। অ্যামলোডিপিন ট্যাবলেট দুই টাকা ৫০ পয়সা থেকে দুই টাকা ৩১ পয়সা, মেটফর্মিন ট্যাবলেট তিন টাকা ২৫ পয়সা থেকে দুই টাকা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ওবায়দুল কাদেরের যেসব কুকীর্তি ফাঁস করল ভারতীয় গণমাধ্যম

জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, এটা ভালো উদ্যোগ। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় যদি ইডিসিএল ওষুধের দাম কমাতে পারে, তাহলে বেসরকারি কোম্পানিগুলোও চাইলে কমাতে পারে। কমানোর ব্যবস্থা যদি সরকার করতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষের উপকার হবে। সরকারেরও লাভ হবে। 

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামাদ মৃধা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও এসেনসিয়াল ড্রাগসের যৌথ উদ্যোগে দাম নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। মূলত ক্রয় প্রক্রিয়ায় পূর্ববর্তী সিন্ডিকেট ভাঙার কারণে দরপত্রে অধিক সংখ্যক দরদাতা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে অংশগ্রহণ করছেন, ফলে কাঁচামাল আগের তুলনায় কম দামে কেনা সম্ভব হচ্ছে। একই সঙ্গে বেড়েছে কর্মঘণ্টা ও কর্মদক্ষতা। এতে আগের বছরের তুলনায় ৫৯ কোটি টাকার ওষুধ বেশি উৎপাদন হয়েছে। একই সঙ্গে উৎপাদন খরচ কমেছে ৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। ধীরে ধীরে ইডিসিএলের উৎপাদিত অন্য ওষুধের দামও কমানো সম্ভব হবে।

আরও পড়ুনঃ  বন্দিশালার ভয়াবহতা উঠে এলো গুমের শিকার ব্যক্তিদের বর্ণনায়

বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ডেল্টা ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, সরকারি ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি মেলানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ, ইডিসিএলে ওষুধের জন্য কোনো বিপণন ব্যয় হয় না। নতুন ওষুধ ও কাঁচামাল উৎপাদন এবং তৈরিতে খরচ করতে হয় না। তাদের ক্রেতাও নির্ধারিত থাকে। ফলে শুধু কাঁচামালের দাম কমার কারণে ইডিসিএল ওষুধের দাম কমাতে পারলেও অন্য কোম্পানিগুলো পারবে না।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ