ব্যক্তিগত শত্রুতা মেটাতে কিংবা কারও থেকে টাকা হাতাতে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা সাজাতেন এক আইনজীবী। এক তরুণীকে দিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করাতেন। তার পরে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা লড়তেন তিনি। সম্প্রতি বিষয়টি নজরে আসতেই আইনজীবীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। একই সঙ্গে ৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাঁকে।
ঘটনাটি নিয়ে প্রথম সন্দেহ জাগে উচ্চ আদালতের। অভিযোগকারী তরুণী দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন। ওই মামলা খারিজের আর্জিতে হাই কোর্টে শুনানি চলছিল। ওই সময়েই হাই কোর্টের নজরে আসে, একই তরুণী আরও অনেকের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইনজীবীও সেই একই ব্যক্তি। বিষয়টি সন্দেহজনক ঠেকায় গোয়েন্দাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। পরবর্তী সময়ে তদন্তে উঠে আসে, ওই তরুণী ভিন্ন ভিন্ন থানায় মোট ১১টি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেগুলোর ভিত্তিতে মোট ১৮টি মামলা করা হয়েছে, যেগুলো লড়ছিলেন অভিযুক্ত আইনজীবী।
পরবর্তী সময়ে ওই নারী স্বীকার করে নেন ঘটনার কথা। তদন্তকারীদের তিনি জানান, আইনজীবীর স্ত্রীর পার্লারে কাজ করতেন তিনি। সেই সূত্রেই আইনজীবীর সঙ্গে তাঁর আলাপ। নিজের শত্রুদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার জন্য আইনজীবী তাঁকে ব্যবহার করতেন, তা-ও স্বীকার করে নেন ওই তরুণী। এ অবস্থায় অভিযুক্ত আইনজীবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বিশেষ আদালত। পাশাপাশি, অন্য দু’টি ধারায় এক বছর ও দশ বছরের জেল এবং আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের আইনজীবীদের ওকালতির পেশায় যুক্ত হওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। অন্যথায় দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে আস্থা হারাবেন সাধারণ মানুষ। আদালত জানিয়েছে, বিচার ব্যবস্থার পবিত্রতা বজায় রাখতে এই ধরনের অপরাধীদের আদালত চত্বরের মধ্যে থাকতে দেওয়া উচিত নয়।
ভারতের উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।