Tuesday, August 26, 2025

আন্দোলনকারী ছাত্রদের কাপড় খুলে ভিডিও করে রেখে দিতেন তৌহিদ আফ্রিদি, দাবি আইনজীবীর

আরও পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে ৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান তৌহিদ আফ্রিদির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে আন্দোলনের সময় ছাত্রদের নগ্ন ভিডিও করে রেখে দিতেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি- আদালতে এমন দাবি করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নয়ন। সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৌহিদ আফ্রিদিকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সারাহ ফারজানা হকের আদালত।

শুনানির পর আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবী নয়ন বলেন, একজন ইউটিউবার মিডিয়া সন্ত্রাস তৌহিদ আফ্রিদি। এই মিডিয়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবচাইতে বড় যে এলিগেশন, সে মিডিয়ার মাধ্যমে, তার ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ সকলকে উৎসাহী করে। এই হত্যায় সে সরাসরি যুক্ত ছিল।

আরও পড়ুনঃ  সারজিস আলমের শ্বশুর লুৎফর রহমানকে হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগ

তিনি আরও বলেন, এই তৌহিদ আফ্রিদি যে ছাত্ররা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিল, সেই ছাত্রদের শরীরের কাপড়-চোপড় সরিয়ে ভিডিও করে রেখে দিত, জিম্মি করে রেখে দিত।

তৌহিদ আফ্রিদিকে দীর্ঘদিন পুলিশ খুঁজছিল। গতকালকে তাকে পেয়েছে। সিআইডি তাকে বিজ্ঞ আদালতে আজকে উপস্থাপন করেছে। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের শুনানিতে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

অপরদিকে তৌহিদ আফ্রিদির রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন তার আইনজীবী খায়রুল ইসলাম। শুনানিতে তিনি বলেন, বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পুলিশের নির্বিচার গুলিতে ভিক্টিম (আসাদুল) নিহত হয়েছেন। এখানে আসামির কোনো ভূমিকা নেই। গত বছরের ১১ নভেম্বর এ মামলার বাদী হলফনামা দিয়ে বলেছেন, তথ্যগত ভুলের কারণে তৌহিদ আফ্রিদির নাম যোগ হয়েছে। তাকে এই মামলায় খালাস দিলে বাদীর কোনো বাধা নেই।

আরও পড়ুনঃ  যে কৌশলে সেনানিবাসে আশ্রয় নেন সাবেক আইজিপি মামুন

তিনি আরও বলেন, তৌহিদ আফ্রিদি কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। তার চিকিৎসাও চলছে। অতিরিক্ত হাঁটাচলায় তার প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসে। এছাড়া তার স্ত্রী গর্ভবতী। মানবিক দিক বিবেচনায় তার জামিন মঞ্জুরের আর্জি জানান আইনজীবী।

শুনানির পর আদালত থেকে বেরিয়ে তৌহিদ আফ্রিদির আইনজীবী খায়রুল ইসলাম বলেন, আমরা বিজ্ঞ আদালতে বলেছি যে, তৌহিদ আফ্রিদি একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। শারীরিকভাবে সে অসুস্থ। সে লিভার এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে সুস্পষ্ট আছে, যদি কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয়, মহিলা হয়, প্রতিবন্ধী হয় তাহলে তার রিমান্ড দেওয়া যাবে না। তার অসুস্থতার সমস্ত কাগজপত্র আমরা বিজ্ঞ আদালতে দিয়েছি।

সোমবার দুপুরে আদালতে তুলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান তৌহিদ আফ্রিদির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এর আগে রোববার রাতে তৌহিদ আফ্রিদিকে সিআইডির একটি দল বরিশাল থেকে গ্রেফতার করে। এর আগে ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থেকে আফ্রিদির বাবা বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন একই মামলায় তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

আরও পড়ুনঃ  কারাগারে একক সেলে নেয়া হলো আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপিকে

মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু। ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটায় আসামিদের ছোড়া গুলি আসাদুলের বুকে ও ডান পাশে লাগে। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর আসামি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ