ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে শিবির প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছেন বাম জোট মনোনীত ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম। রিটে নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ফরহাদের যুক্ত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে। এবার শিবির প্রার্থী ফরহাদের ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা ও রিটের বিষয়টি নিয়েই নিজের ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলেছেন, আমজনতার দলের শীর্ষ নেতা তারেক রহমান।
তিনি বলেন, “ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ না করায় মাইনকা চিপায় পড়ে গেছে ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক। ডাকসু নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে রিট করা হয়েছে যে সে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিল এবং ছাত্রলীগের কেউ এই ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এই মর্মে ছাত্রলীগের থেকে যারা প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থী তা ক্যানসেল করা হয়েছে। তাহলে এইবার এসএম ফরহাদের ক্ষেত্রে কি হবে তার ভাগ্যে কি আছে সে যখন ছাত্রশিবিরের পদ গ্রহণ করল সাধারণ সম্পাদক তখন কি সে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করেছিল? আমরা জানি না পদত্যাগ করেছিল কিনা। তবে এই ধরনের কোন পদত্যাগপত্র সে ফেসবুকে দেয়নি, প্রকাশ করেনি, প্রচার করেনি।”
এরপর আমজনতার দলের এই শীর্ষ নেতা ছাত্র শিবিরকে এই সমস্যা সমাধানের উপায় দেখিয়ে বলেন, “এখন একটা উপায় আছে যে ফরহাদ সাহেব ব্যাকডেট একটা প্যাডে আপনারা লিখে ফেলেন যে আপনি এখন থেকে দুই মাস আগেই ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। শুধু ফরাদ না ছাত্রশিবিরের মধ্যে আরো যারা ছাত্রলীগ থেকে আসছেন যারা গুপ্ত হিসেবে ছিলেন তারাও ওই ব্যাকডেটটা এটা করে ডকুমেন্টস রেডি করে রাখেন। আচ্ছা এমন তো হতে পারে যে ছাত্রলীগের যারা তারা বাঁচতে বাঁচার জন্য টাকা পয়সা দিয়ে ছাত্রশিবিরের পথ ধারণ করছে। এরকম হতে পারে না? আসলে কি হতে পারে? ফরহাদের মুক্তির উপায় কি?”
তারেক এসময় ডাকসুর গঠনতন্ত্রের কথা তুলে ধরে বলেন, “এটা হলো আপনারা বলেন এই মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে হওয়া শর্তেও ডাকসুর গঠনতন্ত্রে আছে যে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের কেউ ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এটা রিটার একটা প্রতিপাদ্য এবং আপনার হলো ফরহাদ সাহেব যদিও গোলাম আজমের অনুসারী এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে তারপরেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কারণ হলো কারণ আমরা যারা বিজয়ী হয়েছি গণঅভ্যুত্থানে তাদের বিজয়ীদের একটা অংশ হলো এই জামাত শিবির বা তারাও আছে তাদেরও অনেক অবদান আছে তো সেই কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন গণঅভ্যতানের খাতিরে আমরা এটা গ্রহণ করতেছি কিন্তু ছাত্রলীগের পদে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।”
গুপ্ত ছাত্রলীগ করেও ফরহাদরা ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না এই প্রশ্ন রেখে আমজনতার তারেক বলেন, “এটা কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই কারণেই কিন্তু প্রার্থীতা খারিজ হয়েছে বাতিল হয়েছে তাহলে ন্যায়বিচারের কথা যদি বলা হয় ফরহাদ এবং ফরহাদের মত যারা গোপন ছাত্রলীগের সদস্য আছে যারা এরকম সেলফিতে ঘুরে ঘুরে জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছে তারা কি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে?”
ফরহাদের বিরুদ্ধে রিট হওয়ায় তার প্রতি সাধারণ ছাত্রদের একটা সিম্প্যাথি জন্মাতে পারে কী না সেই প্রশ্ন রেখে তারেক বলেন, “মাঝে কেউ ভিকটিম হলে তার প্রতি একটা সিম্প্যাথি তৈরি হয়। তো যেহেতু ফরহাদের নামে মামলা হয়েছে সেহেতু সে একটা পেরেশানির মধ্যে আছে। এই পেরেশানি থেকে ভিকটিম হিসেবে তারা কি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন সিম্প্যাথি পাবে? নাকি এরকম হবে যে এখন ফরহাদের জন্য নতুন করে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করা একটা বাধ্যতামূলক কারণ হতে পারে। যাই হোক আমরা দেখি দেখতে থাকি অপেক্ষা করি যে ফরহাদ কি এক কি দেখায় সে আগেই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছিল নাকি নতুন করে ঘোষণা দেয় যে এখন থেকে সে আর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক না এবং সবশেষে এই ধরনের এই যে ফরহাদ সাহেব ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাফারিংস এর শিকার হচ্ছেন এই কারণে তিনি কি সাধারণ ছাত্রদেরও সিম্প্যাথি পাবেন দেখা যাক।”
পরিশেষে আমজনতার দলের এই শীর্ষ নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসিকে খোঁচা মেরে বলেন, “আর কি তবে একটা বাস্তবতার কথা বলি। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি ভিসি এবং ছাত্রশিবিরের যে ক্ষমতা সেই ক্ষমতা আইনের চেয়ে শক্তিশালী। সেই কারণে ফরহাদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে।”