Monday, October 6, 2025

পুলিশের নাকের ডগায় আ. লীগের ঘন ঘন মিছিল, উৎকণ্ঠা বাড়ছে

আরও পড়ুন

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে ঘন ঘন মিছিল করছে আওয়ামী লীগের নামধারী কিছু দল বা গোষ্ঠী। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে, রমনা পার্ক, সংসদ ভবন ও মোহাম্মদপুর—এসব জায়গায় হঠাৎ করে ১০-১২ জনের ছোট ছোট দল মিছিল করে স্লোগান দেয়, ছবি তোলে, তারপর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জনসাধারণ অনেক সময় টেরও পায় না। তারা বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে—কেউ পার্কে ঢোকে, কেউ গলিতে।

পুলিশ এসে পৌঁছানোর আগেই তারা উধাও হয়ে যায়। পুলিশের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। যার ফলে এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা এবং ভীতি তৈরি হচ্ছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুনঃ  মেসেঞ্জারে দুই সহকর্মী ‘খারাপ’ বলায় নিজের বিচার চেয়ে শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি

গোলাম মাওলা রনি বলেন, “আওয়ামী লীগের এ ধরনের আচরণকে ‘ঝটিকা আক্রমণ’ বলাই যায়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যেও এখন এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছে কারণ অস্ত্র ব্যবহারে নিয়মকানুন, তদন্ত ও ট্রাইব্যুনালের জটিলতার কারণে পুলিশ অনেক সময় নিরুৎসাহিত থাকে। তার ওপর দেখা যাচ্ছে, ট্রিপল-নাইন নম্বরে কল করে পুলিশ ডাকার পরই পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে, যা আরো ভীতিকর।’

গোলাম মাওলা রনি প্রশ্ন রাখেন—এরা আসলেই কি আওয়ামী লীগের লোক, নাকি নাম ব্যবহার করছে কোনো গোপন সংগঠন? কেউ কেউ বলছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই পলাতক।

তাদের মধ্যে সাহস, আত্মবিশ্বাস বা সংগঠিত হওয়ার ক্ষমতা অনেকটাই কমে গেছে। সেক্ষেত্রে এই ঘন ঘন মিছিল কি ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত কোনো গুপ্ত তৎপরতা? আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা? রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র? যদি সত্যিই আওয়ামী লীগ এই মিছিল করে থাকে, তাহলে প্রশ্ন জাগে—তারা কি নির্বাচন বানচাল করতে চায়? অথচ, নির্বাচন বানচাল হলে তাদের ভবিষ্যৎ আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

আরও পড়ুনঃ  স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে যা বললেন আসিফ মাহমুদ

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যদি আবার ফিরে আসে তাদের মধ্যে যে দমনপীড়নের আগ্রহ, রক্ত-পিপাসা, প্রতিহিংসার আগুন জ্বলছে—তা অনেকের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠবে। কিছু অডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে যেখানে নেতারা রক্ত, সংঘর্ষ, সহিংসতা চাচ্ছেন। এসব শুনে আতঙ্ক না হয়ে পারা যায় না।

১৫ বছরের শাসন শেষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, অপমানিত। অনেকে বলছে—তারা প্রতিশোধ নিতে চায়, ‘যত রক্ত দরকার, নেবে’—এমন মনোভাব প্রকাশ করছে।”

আরও পড়ুনঃ  সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

রনি বলেন, আর এসব মিছিল যদি আওয়ামী লীগ না করে তাহলে এটা আরো ভয়ংকর। এর মানে দাঁড়ায়—কোনো গোপন সংগঠন, প্রক্সি গ্রুপ বা রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে পরিস্থিতিকে ঘোলা করছে। এমন পরিস্থিতিতে ‘মুনাফিকি রাজনীতি’ সবচেয়ে বিপজ্জনক। কারণ গোপন শত্রু প্রকাশ্য শত্রুর চেয়েও ভয়ংকর।

এদিকে জামায়াতে ইসলামী এবং বিএনপির মধ্যেও সম্পর্কের টানাপড়েন দেখা যাচ্ছে। কিছু এলাকায় বিএনপি এখন জামায়াতবিরোধী অবস্থান নিচ্ছে। জামায়াত এখনো খোলাখুলি মাঠে নামেনি। ভবিষ্যতে এ দুই দলের মধ্যে সংঘাত শুরু হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মেরুকরণ আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ