Thursday, July 3, 2025

অধ্যক্ষ পদের দাবিদার দুজন, চেয়ার দখলে চলছে টানাটানি

আরও পড়ুন

নওগাঁর বদলগাছী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের এক চেয়ারের দাবিদার দুজন। এতে শুরু হয়েছে উত্তেজনা, চেয়ার দখলে চলছে টানাটানি। চেয়ারের এই দাবিদার নিয়ে শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে ওই কলেজের শিক্ষার্থীদের।

ঘড়ির কাটায় দুপুর ১টা। এইচএসএসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষ করে খাতা জমা দিচ্ছে। এমন সময় ইমামুল হোসেন নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে অধ্যক্ষ মাহবুব আলমের পাশের চেয়ারে বসে পড়েন। ঠিক তখনই দুই পক্ষের শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই রূপ নেয় হাতাহাতিতে।

রোববার (২৯ জুন) দুপুর ১টায় মহিলা কলেজে এমন ঘটনা ঘটে। দুই গ্রুপের অধ্যক্ষের চেয়ার দখল নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

বদলগাছী মহিলা কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৭ আগস্ট বদলগাছী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তোলে ওই কলেজের কিছু শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান অধ্যক্ষের পদ থেকে মাহবুব আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করে। অধ্যক্ষ পদ শূন্য দেখা দিলে, নতুন অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হন লুৎফর রহমান।

আরও পড়ুনঃ  সাড়ে ৭ টাকার ইনজেকশন ৩৫০ টাকা

এরপর কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান বিধি পরিপন্থিভাবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে মমতাজ জাহানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মাহবুব আলম অ্যাডহক কমিটির বিরুদ্ধে আবেদন করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জোরপূর্বক পদত্যাগ বা বিধি সম্মত নয় মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এমতাবস্থায় জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় কর্তৃক বিধি মোতাবেক ফজলে হুদা বাবুলকে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি অনুমোদিত হয়। উক্ত অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের নিয়ে ৮ মে সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে অধ্যক্ষ মাহবুব আলমকে স্বীয় পদে বহাল করে।

আরও পড়ুনঃ  স্ত্রীর কিডনিতে প্রাণ ফিরে পেয়ে ‘পরকীয়ায়’ জড়ালেন স্বামী, অতঃপর...

প্রথমে কথা বলতে রাজি না হলেও পরে নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে ইমামুল হোসেন বলেন, হাইকোর্টে রিট করলে পূর্বের অ্যাডহক কমিটি স্থগিত করে। যার ফলে পূর্বের সভাপতি লুৎফর রহমান আমাকে অধ্যক্ষ করে। তাই আজকে বদলগাছী মহিলা কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে আমি দায়িত্ব নিয়েছি।

বর্তমান কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেন, আমার কাছে তারা কোন পরিপত্র দেখাতে পারেনি। শুধু হাইকোর্টে রিট করলে হবে না। আমাকে হাইকোর্টের রায় দেখাতে হবে। আমরা এ বিষয়ে কোনো কিছু জানি না।

আরও পড়ুনঃ  জুলাই নিয়ে পুলিশের আপত্তিকর পোস্ট, প্রতিবাদে আগুন জালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ

আর এ বিষয়ে মহিলা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বলছে, কয়েক মাস থেকে কলেজে চেয়ার দখলের লড়াই চলছে। এতে শিক্ষার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে আমাদের। প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো ঝামেলা চলছেই। আমরা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই।

অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল কালবেলাকে বলেন, হাইকোর্টে রিট করেছে দুই পক্ষের শুনানি হবে। রায় যার পক্ষে যাবে তিনি ওই চেয়ারে বসবে। তার আগেই যদি শিক্ষিত মানুষেরা গন্ডগোল করে। এটা সত্যিই দুঃখজনক।

বদলগাছী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার দখল নিয়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা নিরসন না হলে শিক্ষার ওপর দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। বিষয়টি সমাধানে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ চান এলাকাবাসী।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ