মানুষ হত্যা সবচেয়ে বড় গুনাহ। কোনো কারণ ছাড়া একজন আরেকজনকে হত্যা করার শাস্তি চিরস্থায়ী জাহান্নামের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে।
কোনো নিরপরাধ মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা গোটা মানবজাতিকে হত্যা করার শামিল। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,
এ কারণেই আমি বনি ইসরাঈলের ওপর এই হুকুম দিলাম যে যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল। আর অবশ্যই তাদের কাছে আমার রাসুলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও এরপর জমিনে তাদের অনেকে অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারী। (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৩২)
যারা অন্যায়ভাবে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে, মহান আল্লাহ তাদের কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করবেন। তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। মহান আল্লাহ বলেন,
আর যে ইচ্ছাকৃত কোনো মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার ওপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে অভিসম্পাত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আজাব প্রস্তুত করে রাখবেন। (সুরা নিসা, আয়াত: ৯৩)
কাউকে হত্যা করা সামাজিক অনাচার ও অত্যাচারের অন্তর্ভুক্ত। নিজের স্বার্থ হাসিলের মোহে পড়ে প্রতিশোধ গ্রহণের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে তারা মানবতাহীন। পবিত্র কোরআনে নরহত্যাকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বলা হয়েছে,
আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তোমরা তাকে হত্যা করো না। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩৩)
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম হিসাব হবে হত্যার। এ ব্যাপারে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
কেয়ামতের দিন মানবাধিকার সম্পর্কিত সর্বপ্রথম হিসেব হবে রক্তের। (বুখারি ৬৫৩৩)
হত্যাকারীর তওবা কবুল হবে না মর্মে হাদিসে আছে, হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীকে সঙ্গে নিয়ে কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে। হত্যাকৃত ব্যক্তির মাথা তার হাতেই থাকবে। শিরাগুলো থেকে তখন রক্ত পড়বে। সে মহান আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে বলবে,
হে আমার প্রভু! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে হত্যাকারীকে আরশের অতি নিকটেই নিয়ে যাবে।
শ্রোতারা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে হত্যাকারীর তওবা করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সুরা নিসার ৯৩ নম্বর আয়াতটি তেলাওয়াত করে বললেন, উক্ত আয়াত রহিত হয়নি। পরিবর্তনও হয়নি। অতএব তার তওবা কোনো কাজেই আসবে না। (তিরমিজি: ৩০২৯)