সৌদিপ্রবাসী মোহাম্মদ হাসান (৩০) সাত মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন ২০ বছরের এক তরুণীকে। ভিডিও কলে হওয়া ওই বিয়েতে দেনমোহর ধার্য করা হয়েছিল ১০ লাখ টাকা। সম্প্রতি দেশে ফিরে হাসান বলেন, তার বউ পছন্দ হয়নি। এরপরই ঘটাতে থাকেন অদ্ভূত সব কাণ্ড। যা শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফার আদালতে ভুক্তভোগী ওই তরুণী একটি যৌতুকের মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির প্রতি সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী তরুণী চট্টগ্রামের একটি এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে অভিযুক্ত স্বামী হাসান চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ফতেআলী মুহুরিপাড়ার বাসিন্দা আবুল হাশেমের ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, গত বছরের ৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে একজন আইনজীবীর চেম্বারে মোবাইলে ভিডিও কলের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে সৌদিতে অবস্থানরত মোহাম্মদ হাসানের বিয়ে হয়। মাওলানা মো. হাসান এই বিয়ের আকদ সম্পন্ন করেন এবং একইদিন কাবিননামা রেজিস্ট্রি ও হলফনামা সম্পাদিত হয়।
এ সময় বর ও কনে পক্ষের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিল। বিয়ের পর এত দিন নবদম্পতির মধ্যে ফোনেই কথাবার্তা হয়ে আসছিল। গত ২৭ জুন সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন হাসান। পরদিন তিনি তার শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে দু-তিন দিন থাকার পর নিজের বাড়িতে চলে যান।
গত ১১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ওই তরুণীকে ঘরে তোলার কথা ছিল হাসানের। কিন্তু এর মধ্যে তিনি বেঁকে বসেন। বউ পছন্দ হয়নি জানিয়ে তরুণীর পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি।
ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা বলেন, দুই পরিবারের সম্মতিতে মেয়েকে দেখেশুনে এই বিয়ে করেছিল হাসান। ভিডিও কলে তারা সব সময় কথাও বলত। জামাই বিদেশ থেকে দেশে ফেরার পর মেয়েকে ঘরে তুলে নিতে গড়িমসি শুরু করে। পরে যৌতুকের শর্তে তাকে ঘরে তুলে নিতে রাজি হয়। এখন শুনছি, গোপনে সে আরেকটা বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী ৮ আগস্ট ওই বিয়ে হওয়ার কথা রয়েছে। এখন আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমরা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা চালিয়েছিলাম। কিন্তু লাভ হয়নি, জামাই (হাসান) যৌতুকের দাবিতে অনড় রয়েছে। কোনো সমাধান না হওয়ায় পরে আমরা আদালতে দ্বারস্থ হই।
এদিকে, আদালতে মামলা হওয়ার খবর পেয়ে হাসানের পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী তরুণীর চাচা বলেন, আমরা শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে সাতকানিয়ায় হাসানের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাদের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘর বাইরে থেকে তালা মারা ছিল।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাসানের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, এই বন্ধ থাকা নম্বরটিতেই হাসানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হতো।