Saturday, August 9, 2025

বিল দিতে না পারায় পোশাককর্মী হেলালকে ছাড়ছে না হাসপাতাল, প্রতিদিন যোগ হচ্ছে আরও ১৫০০

আরও পড়ুন

বিল পরিশোধ করতে না পারায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না নিম্ন আয়ের এক পোশাককর্মী মো. হেলাল উদ্দিন (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের রাংচাপড়া গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে। স্বামীকে বাড়িতে আনার জন্যে সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে দেশের বিত্তবান ও পরোপকারীদের দ্বারস্থ হয়েছেন তার স্ত্রী নাছরিন সুলতানা মুক্তা।

ভালুকা প্রেসক্লাবে এসে মুক্তা জানান, তাঁর স্বামী মো. হেলাল উদ্দিন মাওনা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কর্মরত। স্বামী আয় ও নিজের টিউশনির টাকায় কায়ক্লেশে চলছিল তাদের সংসার। তাদের দুই ছেলে। বড় ছেলে মো. মাহফুজুর রহমান সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ও ছোট ছেলে মো. মাহমুদুল হাসান স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। সম্পদ বলতে তাদের ভিটের বাড়ির ৭ শতক জমি আছে।

আরও পড়ুনঃ  গোসলের ভিডিও ধারণ করে ‘ব্ল্যাকমেল’, অতঃপর...

এদিকে, গত ১১জুলাই কারখানায় কর্মরত অবস্থায় শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে প্রথমে ভালুকা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে গত ১৫জুলাই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন মো. হেলাল উদ্দিন। তাঁকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হাসপাতালের আইসিইউ’র বেড খালি না থাকায় দিশাহীন মুক্তা স্বামীকে বাঁচানোর জন্যে ময়মনসিংহ শহরের সায়েম ডায়াগনো কমপ্লেক্সে অ্যান্ড হসপিটাল নিয়ে যান এবং অগ্রিম টাকা জমা দেয়া ছাড়াই ক্লিনিকের আইসিইউতে ভর্তি করেন।

তিনি সেখানে তিনদিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। এরপর তাকে এসডিও’তে রাখা হয়। এক পর্যায়ে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন এবং ক্লিনিকে ভর্তির ১০ থেকে ১১ দিন পর বাড়ি ফেরার উপযোগী হয়ে উঠেন। কিন্তু ক্লিনিকের আইসিও বিল পরিশোধ করতে না পারায় স্বামীকে বাড়ি আনতে পরছেন না মুক্তা।

আরও পড়ুনঃ  মরদেহের ৮ টুকরা উদ্ধারের পর এবার পলিথিনে মিলল অলি মিয়ার মাথা!

ক্লিনিকের বিল পরিশোধের টাকা দ্রুত সময়ে সংগ্রহ করতে পারছেন না তিনি। ভিটে বাড়ি বিক্রি করতে গিয়েও পরছেন না, না পারছেন সুদে টাকা সংগ্রহ করতে। এ অবস্থায় টাকার জন্যে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। এদিকে হেলাল উদ্দিনের আগের ক্লিনিক বিলের সাথে এখন প্রতিদিন পনেরো শত টাকা করে যুক্ত হচ্ছে।

নাছরিন সুলতানা মুক্তা বলেন, ‘অতিকষ্টে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধারদেনা করে স্বামীর ঔষধের টাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। এখন টাকার অভাবে স্বামীকে হাসপাতাল থেকে আনতে পারছি না। বুধবার পর্যন্ত ক্লিনিকের বিল হয়েছে ১লাখ ৭৩হাজার ৫শত টাকা। হাসপাতাল থেকে স্বামীকে বাড়ি আনতে আমি দেশের বিত্তবানদের সহায়তা কমনা করছি।’

আরও পড়ুনঃ  অবশেষে আসল কারণ জানা গেল সাংবাদিক তুহিন হত্যার

ওই ক্লিনিকের ম্যানেজার মনির জানান, মানবিক দিক বিবেচনায় হেলাল উদ্দিনকে আইসিইউতে ভর্তির সময় অগ্রিম কোন টাকা নেওয়া হয়নি। রোগী সুস্থ হওয়া পর্যন্ত বিল হয়েছিল ১লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এখন প্রতিদিন ১হাজার ৫শত টাকা করে বিল বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী টাকা সংগ্রহের কথা বলে বলে সময় নিচ্ছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন টাকাই জমা দেননি। উনি টাকা নিয়ে আসলে মানবিক বিষয়টি পরে দেখা যেতো।’

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ