রংপুরের পীরগাছায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ শোভনকে চ্যাংদোলা করে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সফিকুল ইসলাম আকন্দ পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত আছেন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাত ৯টায় উপজেলার ইটাকুমারি ইউনিয়নের কালিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে তাকে টেনেহিঁচড়ে চ্যাংদোলা করে থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে থানায় আটকে রেখে ১ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
শেখ শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পাশাপাশি ঢাকা জজকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মরত। তিনি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারি ইউনিয়নের পূর্ব হাসনা গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা ও স্থানীয়রা জানান, গত ১৮ আগস্ট উপজেলার ইটকুমারি ইউনিয়নের আমতলী বাজারের শতবর্ষী আমগাছ কাটার বিরোধিতা করেন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেনসহ স্থানীয় লোকজন। গাছ কাটার সময় ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচারের কারণে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ কর্মী লুৎফর রহমানের ইন্ধনে শামীমের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
পরে শামীমকে আহত অবস্থায় পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা শামীম বাদী হয়ে থানায় গিয়ে মামলা করেন। তবে মামলার পরও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের এসআই সফিকুল গ্রেপ্তার করেনি বলে অভিযোগ করা হয়।
পরে তারা আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসেই চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে ছাত্রদল নেতা শামীমের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন। সোমবার রাত ৯টার দিকে কালিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শামীমের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তৎক্ষণাৎ এসআই শফিকুলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদল নেতা শামীমকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় ঢাবি ছাত্রদল নেতা শেখ শোভন আইনজীবী পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তারের কারণ জিজ্ঞেস করেন। এ পর্যায়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে টেনেহিঁচড়ে চ্যাংদোলা করে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে শতাধিক এলাকাবাসী পীরগাছা থানায় উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানালে রাতেই শোভনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী ঢাবি ছাত্রদল নেতা শেখ শোভন অভিযোগ করে বলেন, ওসি ও এসআই সফিকের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে আমাকে মারধর করে থানায় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়েছে। এ ছাড়া আমার রাজনৈতিক সহকর্মী শামীমকে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ন্যায্য বিচার চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই সফিকুল ইসলাম আকন্দ জানান, চাঁদাবাজির মামলায় ছাত্রদল নেতাকে গ্রেপ্তারের সময় যৌথবাহিনীর সঙ্গে অ্যাডভোকেট শেখ শোভন উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ালে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তার ভাই এসে তাকে থানা থেকে নিয়ে যায়। ওখানে কাউকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে জানতে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোমেল বড়ুয়ার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।