Thursday, July 3, 2025

ভয়াবহ সুনামির আশঙ্কা, প্রাণহানি ঘটতে পারে ৩ লাখ মানুষের

আরও পড়ুন

জাপানে ভয়াবহ ‘মেগাক্যুয়েক’ বা বিশাল ভূমিকম্পের সম্ভাবনায় নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশটির সরকারের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প ও তার পরবর্তী সুনামিতে প্রায় ২,৯৮,০০০ মানুষ মারা যেতে পারেন, আর ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে দুই ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে জাপানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলবর্তী ‘নানকাই ট্রাফ’ এলাকায় এ ধরনের একটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। আর এমনটা ঘটার সম্ভাবনা প্রায় ৭৫ থেকে ৮২ শতাংশ।

জাপান সরকার জানিয়েছে, ২০১৪ সালে দুর্যোগ প্রস্তুতি পরিকল্পনার আওতায় যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তা সম্ভাব্য প্রাণহানি মাত্র ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারবে। অথচ পরিকল্পনা অনুযায়ী মৃত্যুর হার কমানো উচিত ছিল ৮০ শতাংশ পর্যন্ত।

আরও পড়ুনঃ  স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি পেয়েই পরকীয়ায় জড়ালেন স্বামী!

এই পরিস্থিতিতে জাপান সরকার নতুন করে একটি হালনাগাদ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে বাঁধ নির্মাণ, জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত মহড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এক সরকারি বৈঠকে বলেন, ‘প্রাণহানি কমাতে হলে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, বেসরকারি সংস্থা ও সাধারণ জনগণকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

নানকাই ট্রাফ হলো ৫০০ মাইল দীর্ঘ একটি সমুদ্রতলীয় খাত, যেখানে একটি টেকটোনিক প্লেট আরেকটির নিচ দিয়ে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। গত ১,৪০০ বছরে এই অঞ্চলে প্রতি ১০০ থেকে ২০০ বছর পর পর বড় ভূমিকম্প ঘটেছে। সর্বশেষ মেগাক্যুয়েক হয়েছিল ১৯৪৬ সালে।

আরও পড়ুনঃ  কুম্ভ মেলায় মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে যে গোপন তথ্য উঠে এসেছে বিবিসির অনুসন্ধানে

২০২৩ সালের আগস্টে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) প্রথমবারের মতো সতর্কবার্তা জারি করলেও এক সপ্তাহের মধ্যেই তা তুলে নেওয়া হয়। তবে সাম্প্রতিক রিপোর্টগুলো নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থার প্রধান রিওইচি নোমুরা বলেন, বর্তমান বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি দিয়ে ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট সময়, স্থান বা মাত্রা পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তাই জনসাধারণকে অহেতুক আতঙ্কিত না হয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে জাপানে রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং ১৩২ ফুট উচ্চতার সুনামি প্রায় ১৫,৫০০ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। এই দুর্যোগে ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩টি চুল্লি বিধ্বস্ত হয় এবং ব্যাপক তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুনঃ  ভোরে বাবা-মাকে খুন, সন্ধ্যায় মসজিদে ঢুকে হামলা

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, নানকাই ট্রাফে যদি এবার মেগাক্যুয়েক হয়, তবে তা ২০১১ সালের ভূমিকম্পের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। জাপানের সরকার ও জনগণের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ—এই সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত হওয়া।

সূত্র : ডেইলি মেইল

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ