শেরপুরের শ্রীবরদীতে স্ত্রীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম খলিলুর রহমান (৮০) এবং ভুক্তভোগী খোশেদা বেগম (৭০)।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, খলিলুর রহমান তার স্ত্রী খোশেদা বেগমকে ঘর থেকে টেনে উঠানে নিয়ে আসছেন। এর আগেই ঘরের সামনে উঠানের একটি অংশে কোদাল দিয়ে সামান্য পরিমাণ গর্ত করে রেখেছেন। পরে সেই গর্তের ভেতর তাকে রেখে তার ওপর কোদাল দিয়ে মাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে অসুস্থ ওই বৃদ্ধা আত্মরক্ষায় চিৎকার করছেন।
এতে তার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে সজোরে মুখে চড় মারছেন।
খলিলুর রহমানের এমন কর্মকাণ্ড লোকজন দূর থেকে দেখলেও খোশেদা বেগমকে রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি।
জানা গেছে, খলিল-খোশেদা দম্পতির নাতি খোকন (১৯) ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেন। পরে ওই ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী খোশেদা বেগম। একটা সময় অনেক সেবা ও চিকিৎসা করেও কোনো সুস্থ হননি। বর্তমানে খলিলুর রহমান খোশেদা বেগমের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন না। দীর্ঘসময় যন্ত্রণা সইতে না পেরে অতিষ্ঠ হয়ে যান খলিলুর রহমান। স্ত্রীর চিকিৎসা, ওষুধ, সেবা করতে করতে তার অসহ্য হয়ে রাগে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানান, সবার সঙ্গে হাসিখুশিভাবে চলাফেরা করেন খলিল। কারো সঙ্গে কখনোই ঝামেলায় জড়ান না। তার স্ত্রীর অসুস্থতার পর থেকে মন খারাপ। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক যন্ত্রণা সহ্য করায় এমনটি ঘটিয়েছেন। বিষয়টি ভিডিও করে তারই নাতি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, ‘ভিডিও চিত্র দেখার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে সামাজিকভাবে সমাধান হয়েছে শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঘটনার ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ গণমাধ্যমে বলেন, ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি সত্যিই মর্মান্তিক। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।