Sunday, August 10, 2025

বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত করতে হাসিনার হুমকি: চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ট্রাইব্যুনাল

আরও পড়ুন

ভুক্তভোগী, সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়ে বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত করতেই ভারতের দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনা নানান বক্তব্য দিচ্ছেন বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদালত অবমাননায় তার ছয় মাসের সাজার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ পর্যবেক্ষণ এসেছে।

শনিবার (৯ আগস্ট) রায়ের পর্যবেক্ষণের বিষয়টি প্রসিকিউশন সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ রায়ের অনুলিপি আইজিপিকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর সেখান থেকে একের পর এক অডিও বক্তব্য দিচ্ছেন। ভাইরাল হওয়া একটি অডিওতে ‘২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’ বলতে শোনা যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে।

এই অডিও যে শেখ হাসিনার তা সিআইডির ফরেনসিক প্রমাণিত হয়। এরপর ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার মামলা করে প্রসিকিউশন। গত ২ জুলাই এ মামলায় শেখ হাসিনার ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী, সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তাদের হুমকি দিতেই শেখ হাসিনার এ হুমকি দেন।

আরও পড়ুনঃ  সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্কে বেরিয়ে এলো নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য!

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম বলেন, ‘তার অ্যাক্টিভিস্টরা এখনো এই দেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে যেকোনো মানুষ এই জিনিসটাতে ভয় পাবে। যখনই একজন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্যগ্রহণে ভয় পাবে, এটি ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল বলে ট্রাইব্যুনাল মনে করছে। আবার যারা এই মামলার সাক্ষী, ভিকটিম তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার ব্যাপারেও ওনার কথোপকথনে দেখা যায়। সব মিলিয়ে ট্রাইব্যুনাল মনে করছেন যে, এই কার্যক্রম দ্বারা ট্রাইব্যুনালের বিচারব্যবস্থাকে তিনি বাধাগ্রস্ত করেছেন।’

আরও পড়ুনঃ  পদ্মা সেতু নির্মাণে মোবাইলে সারচার্জ বন্ধের দাবিতে রিট

এ রায়ের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে আইজিপিকে। প্রসিকিউশন বলছে, শেখ হাসিনা ‘হেইট স্পিচ’ ছড়াতে থাকলে আবার আদালত অবমাননার মামলার মুখোমুখি হতে হবে তাকে।

গাজী এম এইচ তামীম আরও বলেন, আইনে কাউকে তো আর কথা বলতে বাধা দেওয়া যায় না। আইনে যেটা করা যায় সেটা হলো, এই টেরিটরির মধ্যে যাতে তার এই ধরনের হেইট স্পিচ প্রচার না করে, সেই আদেশ ট্রাইব্যুনাল দিয়েছেন। যদি উনি আবার হেইট স্পিচ ছড়ান তাহলে আমরা আবার আদালতের শরণাপন্ন হব।

গত ২ জুলাই আদালত অবমাননার মামলায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা, মামলার বাদী, সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানো ও হুমকি দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আইনে এ সাজা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলাম, আমি দায়ী : চৌধুরী মামুন

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন– বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক চৌধুরী।

তারা আদালতে আত্মসমর্পণের পর বা তারা যে দিন গ্রেপ্তার হবেন সেদিন থেকে এ সাজা কার্যকর হবে। এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনাকে সাজা দিলেন বাংলাদেশের কোনো আদালত। দেশের পটপরিবর্তনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এটাই প্রথম সাজার রায়।Bangladeshi cuisine

আদালতে শেখ হাসিনা ও শাকিলের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। অ্যামিক্যাস কিউরি হিসেবে বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ