Sunday, August 10, 2025

বিমান সফলভাবে অবতরণের পরও সকল যাত্রী নিহত কিভাবে?

আরও পড়ুন

একটি বিমান নিখুঁতভাবে অবতরণ করেছে, কিন্তু তবুও বিমানে থাকা ৩০১ জন যাত্রীর একজনও বাঁচেনি! কি অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে? কিন্তু, তবে এটাই বাস্তব। ইতিহাসে যে ঘটনাটি স্থান পেয়েছে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও শিক্ষণীয় বিমান দুর্ঘটনাগুলোর একটি হিসেবে।

ঘটনাটি ১৯৮০ সালের ১৯ আগস্ট। সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১৬৩ রিয়াদ থেকে জেদ্দার উদ্দেশে রওনা দেয় ৩০১ জন আরোহী নিয়ে। তবে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের কার্গো হোল্ডে ধোঁয়া ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পাইলট জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে রিয়াদ বিমানবন্দরে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজও সঠিকভাবেই বাস্তবায়ন করেন পাইলট।

আরও পড়ুনঃ  নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দিলেন ইলন মাস্ক

বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করে, রানওয়েতে নিখুঁতভাবে থামে কিন্তু এখানেই ঘটে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। অবতরণের পর দ্রুত যাত্রীদের বের করে আনার পরিবর্তে, পাইলট ইঞ্জিন বন্ধ করতে ও বিমান সম্পূর্ণ থামাতে অযথা সময় নেন। বাইরে উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত থাকলেও বিমানের ভেতর থেকে কোনো দরজা খোলার নির্দেশ আসেনি। এই সময়ের মধ্যেই কার্গো হোল্ডের আগুন থেকে সৃষ্টি হওয়া বিষাক্ত ধোঁয়া গোটা কেবিনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

অবতরণের প্রায় ২৩ মিনিট পর, যখন উদ্ধারকারীরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে, তখন দেখতে পান এক বিভীষিকাময় হৃদয়বিদারক দৃশ্য। সব যাত্রী নিজ নিজ আসনে নিথর হয়ে বসে আছেন। কারো শরীরে পোড়ার কোনো চিহ্ন নেই, কিন্তু, সকলেই মৃত। সবাই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

আরও পড়ুনঃ  সৌদি পৌঁছালো ইরানের লিখিত বার্তা, কী আছে এতে?

এই মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির পেছনে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, বরং ছিল জরুরি মুহূর্তে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যর্থতা। সময়মতো যাত্রীদের বের করে আনা গেলে হয়তো একটি প্রাণও হারাত না। ঘটনার পর, বিশ্বজুড়ে বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনা হয়। জরুরি অবতরণের পর যাত্রী সরিয়ে নেওয়ার নিয়ম কঠোরভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়। পাশাপাশি, বিমানে আরও উন্নত অগ্নি শনাক্তকরণ ও দমন ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়।

সৌদিয়া ফ্লাইট ১৬৩-এর এই ঘটনা আজও বিমান চলাচলের ইতিহাসে এক গভীর সতর্কবার্তা হিসেবে রয়ে গেছে একটি ভুল সিদ্ধান্ত, একটি মুহূর্তের বিলম্ব কতটা প্রাণঘাতী হতে পারে, তা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এই দুর্ঘটনা। আর এ শিক্ষাই আজকের আকাশপথকে করেছে আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ।

আরও পড়ুনঃ  ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করুন : জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ

বিমান যাত্রার সাথে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স, বিমান নিরীক্ষাকারী ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে পাইলট ক্রু কিংবা যাত্রী সকলকেই যে যার যার জায়গা থেকে হতে হবে সচেতন ও বুদ্ধিদীপ্ত। তাহলেই কেবল বিমান দুর্ঘটনাগুলো এড়ানো সম্ভব অনেকাংশেই।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ