রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া রিকশাচালক আজিজুর রহমান অবশেষে জামিন পেয়েছেন। শনিবার (১৭ আগস্ট) আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়াশাল গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান জীবনের প্রথম থেকে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছেন। পড়ালেখা চতুর্থ শ্রেণীর গণ্ডি পেরোতেই সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। কখনো রাজমিস্ত্রীর সহকারী, আবার কখনো অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে চলে তাদের সংসার। বর্তমানে তিনি ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
চার সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন আজিজুর। তার বৃদ্ধ মা-বাবা ও ভাই—তিনজনই শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী। গ্রামের বাড়িতে মাত্র দুই শতক জমিতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নির্মিত একটি টিনশেড ঘরে বাস তাদের। সেটিও এখন জরাজীর্ণ অবস্থায়।
তিন বছর আগে জীবিকার খোঁজে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় আসেন আজিজুর। রিকশা চালিয়ে যা উপার্জন করতেন তা দিয়েই চলত তাদের সংসার, পাশাপাশি পাঠাতেন কিছু টাকা গ্রামে। সেই টাকায় কোনোরকমে দিন কাটত তার অসুস্থ মা-বাবা ও ভাইয়ের।
তবে গ্রেপ্তারের পর আজিজুরের পরিবারে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। কয়েক দিন ধরে তাদের ঘরে চুলা জ্বলেনি। না খেয়ে কাটাতে হয়েছে দিন। মাঝে মাঝে অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পেতেন, তা দিয়েই কোনোভাবে দিন পার করেছেন তার মা।
স্থানীয়রা জানান, আজিজুর কখনোই কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ছোটবেলা থেকেই তিনি ভদ্র, নম্র ও সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত। রিকশা চালিয়ে যা আয় করতেন, তা দিয়েই সংসার চালাতেন এবং অসুস্থ বাবা-মায়ের দেখাশোনা করতেন।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানের সময় একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। অবশেষে জামিন পাওয়ায় মুক্তি পেলেন তিনি।