Monday, August 18, 2025

‘জামায়াত নেতা আমাকে বলেন ২৫ লাখ না, আপনি ১২ লাখ টাকা দিলেই হবে’

আরও পড়ুন

ফরিদপুরের সালথায় নিলুফা ইয়াসমিন (৫৫) নামে এক বিধবা নারীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও ইউপি সদস্যসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সালথা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। তিনি দাবি করেন, চাঁদা না দেওয়ার কারণে প্রভাবশালী জামায়াত নেতাসহ অন্যরা তার জমি দখলের চেষ্টা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের চন্ডীবরদী গ্রামে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে উত্তর চন্ডীবরদী মৌজায় আমার ৯৩ শতাংশ জমি পতিত রয়েছে। জমিটি পতিত হওয়ায় স্থানীয় যুবক ও তরুণরা সেখানে খেলাধুলা করে। সম্প্রতি পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পতিত ওই জমিতে শতাধিক আমের গাছ লাগিয়ে বেড়া নির্মাণ করি।

তিনি বলেন, সবশেষ গত ৪ আগস্ট সেখানে আরও কিছু গাছ লাগাতে গেলে বাধা দেন সালথা উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল ফজল মুরাদ, বল্লভদী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ওলিয়ার রহমান ও স্থানীয় আরটি হাসান। একপর্যায়ে তারা আমার জমিকে খেলার মাঠ দাবি করে সব গাছ উপড়ে ফেলেন এবং বেড়া ভাঙচুর করেন।

আরও পড়ুনঃ  আপনাদের মেয়ে আর নেই, মধ্যরাতে শাশুড়িকে ফোনে জানিয়ে উধাও জামাই

এ সময় জামায়াত নেতা আবুল ফজল মুরাদ ও ইউপি সদস্য ওলিয়ার এবং আরটি হাসান আমাকে বলেন, এই জমিতে কিছু করতে হলে আমাদের ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে। পরে জামায়াত নেতা আবুল ফজল মুরাদ আমাকে বলেন, ২৫ লাখ না, আপনি ১২ লাখ টাকা দিলেই হবে। আর যদি টাকা না দেন, তাহলে এই জমিতে আপনাকে আসতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে আমি সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে চাঁদা দাবিদাররা স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ভুয়া তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করান। এমন অবস্থায় আমার জমি উদ্ধারে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

আরও পড়ুনঃ  বিপুল পরিমাণে টাকা নিয়ে ভারতে পালানোর সময় আ. লীগের প্রভাবশালী নেতা গ্রেপ্তার

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে সালথা উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল ফজল মুরাদ বলেন, ৫৫ বছর আগে ওই জমি সড়ক ও জনপদ অধিদফতর কিনে নেয়। এরপর থেকে জায়গাটি খালি থাকায় সেখানে স্থানীয় যুবক ও তরুণরা খেলাধুলা করে আসছিল। এর আগে সরকারি বরাদ্দের মাধ্যমে মাঠটি ভরাটও করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি ওই খেলার মাঠটি নিজের জমি দাবি করে আমের গাছ লাগান নিলুফা ইয়াসমিন। এতে আমরা বাধা দিলে আমার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  এবার আরেক জেলায় বন্যার আশঙ্কা

এ বিষয় অন্য অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ওলিয়ার রহমান ও আরটি হাসানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাদেরকে একাধিবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

সালথা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, জায়গাটি খালি থাকায় স্থানীয় ছেলে-পেলেরা খেলাধুলা করতো। তবে জায়গাটি মালিকানা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছে। আমি নিজে সেখানে গিয়েছিলাম। এখন সড়ক ও জনপদ অধিদফতর তদন্ত করলে জায়গাটির আসল মালিক বের হয়ে আসবে।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিছুর রহমান বালী বলেন, ওই জমির মালিকানা যাচাই-বাছাই করতে স্থানীয় তহশিলদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ