ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা নেই।
এ নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আজকের হাইকোর্টের রায় উল্টানোর নায়ক অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি একথা বলেন।
ওই পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আজকের হাইকোর্টের রায় উল্টানোর নায়ক অ্যাডভোকেট শিশির মনির। বিকেলের ঘটনাটা একদম টার্নিং পয়েন্ট।
হাইকোর্ট ডাকসু স্থগিত করলেই যদি ওইদিন আপিল না হতো— ২ দিনের মধ্যে সিরিয়াল পেতো না। তারপর কোর্ট টানা ১৫ দিনের জন্য বন্ধ! অথচ ডাকসুর ডেট আর মাত্র ৮ দিন পর। মানে—গেম ওভার!
‘কিন্তু সেই ক্রুশিয়াল মোমেন্টে শিশির মনির হাতে লিখে, দৌড়ে গিয়ে চেম্বার জজ কোর্টে পিটিশন দিলেন। শেষ মুহূর্তে যুক্তি দেখিয়ে স্থগিতাদেশকে উল্টে দিলেন। ফলাফল? ডাকসু নির্বাচন বেঁচে গেল ষড়যন্ত্রের হাত থেকে।
হাসনাত বলেন, ‘Thanks to শিশির মনির— তাঁর তড়িৎ সিদ্ধান্ত আর বুদ্ধিমত্তার জন্যই ডাকসু থেমে যায়নি।’
আরও বলেন, ‘এবার আসি কবির কথায়…শোন হে কবি মি/থ্যান্দ্র/নাথ! তোমার জন্মের আগেই শিশির মনির ঢাবির ছাত্র ছিল। এখন তিনি ঢাবির অ্যালামনাই।
বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে তাঁকে আইনজীবী করবে— তাতে তোমার মাথাব্যথা কেন?’
‘আসলেই শিশির মনির সেই কাজটাই করেছেন যেটার জন্য তোমরা মিছিল করছো। শিশির মনিরের ওপর খেপলে বাম খেপতে পারে। কিন্তু তোমরা খেপছো কেন ভাই? মানে ঘাপলাটা অন্য জায়গায়!’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রশ্ন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীকে— তুমি যদি ডাকসু নির্বাচন সময়মতো হোক— এই চাওয়ার পক্ষে থাকো, তাহলে তো খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু তুমি উল্টো চিল্লাচ্ছো কেন? এটা কি স্ববিরোধিতা, নাকি সরাসরি বলি—নিরাবুদ্ধিতা?
তিনি আরও বলেন, ‘মনে রেখো— যে আইনজীবী দ্রুত সিদ্ধান্তে চেম্বার কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ উল্টে দিয়ে ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করলেন, তাঁর বিরুদ্ধে দাঁত কেলানো মানেই নিজের অর্বাচীনতা প্রমাণ করা। আরে ভাই, নির্বাচনের পক্ষে থাকলে ‘আইনজীবীকে’— তা কোনো বিষয় না। কাজটাই আসল।
হাসনাত বলেন, ‘মনে পড়ছে তো? আপনাদের নেতা তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেকেই জনাব অ্যাডভোকেট শিশির মনিরের ক্লায়েন্ট ছিলেন। তখন তো কোনো সমস্যা ছিল না। এখন হঠাৎ এতো জ্বালা কেন?’
তিনি বলেন, ‘সত্যিটা হলো— বিনা কারণে চিল্লাচিল্লি করলে নিজের মার্কেটই নষ্ট হয়। ‘কবি আবীন্দ্রনাথ’ আসলে ভেতরে ভেতরে জ্বলে পুড়ছেন, কারণ তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। স্থগিতাদেশ উঠতেই কবির মুখের হাসি গায়েব। লোডশেডিং-এর মতোই নিখোঁজ!’
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনিরকে এ রিটের পক্ষের আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করায় ডাকসুর ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম আবিদ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সোমবার বিকেলে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ রিটের পক্ষে যে আইনজীবী নিযুক্ত করেছেন সে হচ্ছে শিশির মনির। হে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্পষ্ট ভাষায় বলছি, আজকে থাকার কথা ছিল কবরে, কিন্তু আছি এখানে। আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সেই প্রশাসনে বসেছে। তোমাকে তো কোনো দলের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বসানো হয়নি।’
তার এ বক্তব্যের পর সামাজিক মাধ্যমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টির পক্ষে-বিপক্ষে চলছে যুক্তিতর্ক।