Tuesday, September 2, 2025

ছেঁড়া বেল্ট ও একজন অবিকল জিয়াউর রহমান

আরও পড়ুন

শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তার সেনাজীবন ও রাজনৈতিক জীবনে সাধারণ জীবনযাপনের জন্য খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ছেঁড়া গেঞ্জি বা সাধারণ পোশাকে তার চলাফেরার অনেক গল্প প্রচলিত আছে, যা তাকে সাধারণ মানুষের কাছে গণমুখী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে তাকে ছেঁড়া বেল্ট পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। এই ছবিটি নিয়ে তার ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের পাশাপাশি নেটিজেনরা ত্যাগী ও সাদাসিধে জীবনযাপনের জন্য তার প্রশংসা করেছেন। তারেক রহমানের ছেঁড়া বেল্টের ছবি দেখে তার ভেতরে অনেকেই কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের অবিকল প্রতিচ্ছবি দেখছেন। সমর্থকরা বাবার মতো তাকে একইরকম সাধারণ ও ত্যাগী বলে মনে করছেন।

এই ছবিটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার কিনা, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে, নেটিজেনরা বলছেন, এটি প্রমাণ করে যে, তিনি বিলাসিতা বা আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপনের প্রতি আগ্রহী নন, বরং সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করেন। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চান।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তারেক রহমান যে ব্যক্তির সন্তান, সেই জিয়াউর রহমানের দক্ষতা, অবদান, দেশপ্রেম, সততা এবং সাধারণ জীবন-যাপন বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিশেষ মর্যাদার স্থান দখল করে আছে। তাই তারা এই ছবিটিকে তার ত্যাগ ও সাধারণ জীবনযাপনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। অনেকেই মনে করছেন, তারেক রহমানের সাদাসিধে জীবনযাপন তার বাবা জিয়াউর রহমানের মতোই এবং এর মাধ্যমে তিনি মানুষের মন জয় করতে পেরেছেন।

আরও পড়ুনঃ  ‘সংবিধানে জুলাই ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্তির কোনো কারণ নেই’

এর আগে, সম্প্রতি তারেক রহমানের লন্ডনে পাবলিক বাসে যাতায়াতের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে দেখা যায়—খাকি রঙের প্যান্ট, আকাশি রঙের শার্ট, পায়ে কেডস। এসব ছবির নিচে প্রচুর প্রশংসা কুড়ান তিনি। অনেকেই মনে করেন, লন্ডনে তারেক রহমান কীভাবে একজন সাধারণ মানুষের মতো জীবন-যাপন করছেন, এই ছবিগুলো তার প্রমাণ।

কৈশোরে বিটিভিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৱকারে তারেক রহমানকে বলতে শোনা যায়, তার বাবার প্যান্ট শার্ট কেটে ছোট করে তাদের দুই ভাইকে পরানো হতো। এরকম একজন রাষ্ট্রনায়কের সন্তান লন্ডনের রাস্তায় পাবলিক বাসে যাতায়াত এবং সাধারণ জীবন-যাপনের মাধ্যমে বাবার ডুপ্লিকেট হয়ে উঠেছেন, যা আশার আলো দেখাচ্ছে এদেশের মানুষকে।

তারেক রহমান সাত বছর ধরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তার আগে ছিলেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। পুরো দলের কাণ্ডারি তিনি। ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে দলের আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে দলীয় নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেন তার ম্যাজিক নেতৃত্বে।

দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসা এই নেতা নীরবে অনেকটা গোপনে আরও কিছু কাজ করে আসছেন। যা কখনো সামনে আসেনি। তিনি নিজেও এসব কাজ প্রকাশ্যে আনতে চান না। দলীয় নেতাকর্মীদের বাইরে সাধারণ অসহায় মানুষের জন্য নানা ধরনের সেবা কার্যক্রমে যুক্ত তিনি। বিদেশে অবস্থান করলেও এসব কর্মকাণ্ড তিনি নিজেই সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করেন, তদারকি করেন।

আরও পড়ুনঃ  ইউএনওর নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, আত্মতৃপ্তির জন্যই তিনি এসব কাজ করে যাচ্ছেন। অসহায় অনেক পরিবারের পুরো দায়িত্ব রয়েছে তারেক রহমানের কাঁধে। তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় মাদ্রাসা, হাসপাতাল। নিজ উদ্যোগেই এগুলোর খরচ বহন করছেন তিনি। বিএনপি স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনেকে জানেন না তারেক রহমান সরাসরি এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। বিএনপি’র পাশাপাশি এসব কর্মকাণ্ড জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এবং আমরা বিএনপি পরিবারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

প্রথমে বৃদ্ধ এবং এতিম এমন ২৫টি পরিবারের দায়িত্ব নেন তারেক রহমান। পর্যায়ক্রমে এই সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়েছে। প্রায় দেড়শ’র মতো অসহায় শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন তারেক রহমান। দায়িত্ব নেয়া শিক্ষার্থীদের ১৪ জনের মতো চিকিৎসক হয়ে এখন দায়িত্ব পালন করছেন।

জিয়া সাইবার ফোর্স, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (কুমিল্লা ডিভিশন) সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ হোসেন ফেসবুকে লিখেছেন, নিঃসন্দেহে তারেক রহমান জিয়াউর রহমানের ডুপ্লিকেট। এই ছবিটি তার প্রমাণ। দুজনের শরীরে যে একই রক্তের প্রবাহ। তারেক রহমানের জরাজীর্ণ পুরোনো বেল্টের দিকে নজর দিলেই বুঝতে পারবেন আমরা আরেকজন জিয়াউর রহমানকে আগামীর রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পেতে যাচ্ছি।আমি মাঝেমধ্যে এই ভদ্রলোকের শার্টগুলোর দিকে লক্ষ করি। ৫ বছর আগে যে শার্ট পরতে দেখেছিলাম, এখনো সেই শার্ট পরে থাকেন। বেশিরভাগ সময় সাদা ও আকাশি রঙের শার্ট দুটি পরে ভিডিও বার্তায় আসেন তিনি। গত দুইটা ঈদে পুরোনো পাঞ্জাবি পরিহিত ছিলেন। যে পাঞ্জাবি অন্তত ২/৩ বছর পুরোনো।

আরও পড়ুনঃ  বিএনপির 'ধন্যবাদ', এনসিপির শঙ্কা, জামায়াত প্রস্তুত

‘‘তিনি কিছুদিন আগে যে গাড়িতে চড়ে ড. ইউনুসের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন, সেটি লন্ডন বিএনপির এক নেতার গাড়ি। বাংলাদেশের তুলনায় লন্ডনে গাড়ি কেনা সহজ। ব্যাংক থেকে গাড়ি কিনে দেয়। দাম বাংলাদেশের তুলনায় অর্ধেকেরও অনেক কম। তবুও উনার কোন বিলাসবহুল গাড়ি নেই। একটা পুরোনো মডেলের গাড়ি আছে। পরিবারে অন্য সদস্য যেদিন সেই গাড়ি নিয়ে বের হয় সেদিন তিনি কোথাও যেতে হলে বাসে করে চলাচল করেন। গণপরিবহন কিংবা ঢাকার রাস্তায় রিকশায় চড়া উনার পুরোনো অভ্যাস’’, লেখেন তিনি।

শরিফ নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, তারেক রহমান জিয়াউর রহমানের ডুপ্লিকেট কপি,আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে পাহাড়ে আবারো শান্তি দেখবো, সীমানায় শান্তি দেখবো, গার্মেন্ট সেক্টরে উন্নতি দেখবো, কৃষিতে উন্নয়ন দেখবো- এই আশাগুলা আমরা করতেই পারি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ