চাঁদা না দেওয়ার কারণে ব্যাহত হচ্ছে রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের নির্মাণকাজ। বিশেষ করে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের বহুতল ভবনে লিফট স্থাপন কার্যক্রম চাঁদাবাজির হুমকিতে বন্ধ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি রাজবাড়ী অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার। তিনি হাসপাতালের নির্মাণকাজের অগ্রগতি জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, ‘চাঁদা দাবির কারণে লিফট স্থাপনের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। ঠিকাদারের লোকজন ভয়-ভীতির মধ্যে আছেন, ফলে কাজ করতে পারছেন না।’
জেলা প্রশাসক এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। সভায় উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তারাও ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কিছু চাঁদাবাজ এসে হাসপাতালের লিফটের ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দিলে বিভিন্ন সময়ে তারা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এতে হাসপাতালের লিফটের কাজ শেষ করতে সময় লাগছে। একাধিকবার আমাদের নিয়োজিত ঠিকাদার চাঁদা পরিশোধ করেছেন। এক গ্রুপ চাঁদা নিয়ে যায়, আরেক গ্রুপ আসে। ঠিকাদার কতজনকে চাঁদা দেবে। এর আগে হাসাপাতালের এসির তার, আউটডোরের জিনিসপত্র খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কিছু চাঁদাবাজ শ্রেণির লোক রয়েছে তারা বিভিন্ন সময়ে এসে হাসপাতালের নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়। তারা এসে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ঠিকাদারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
চাঁদাবাজির বিষয়টি নিয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের নির্মাণকাজের ঠিকাদারের কাছে চাঁদাবাজির বিষয়টি উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উঠেছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজি হতে দেওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের সম্প্রসারণ প্রকল্পটি জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগ, যা জেলার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থায় বড় অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে চাঁদাবাজির কারণে এ কাজ থমকে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ বাড়ছে।
স্থানীয়রা দ্রুত নিরাপদ পরিবেশে কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন, যেন এই গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ সময়মতো সম্পন্ন করা যায়।