সোমবার রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ৩১ জন নিহত হয়েছে। রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অনেকে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে রয়েছেন বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম।
বিমান বিধ্বস্তের এ ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নানা কথা হচ্ছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ নিহত পাইলটকে নিয়েও কথা বলছেন। এবার তাকে নিয়ে এক দীর্ঘ আবেগঘন পোস্ট দিলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল সোয়া ১১টায় ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে অভিনেত্রী হিমি লেখেন, ‘মর্মান্তিক হলেও দয়া করে পাইলটকে দোষ দেবেন না।
তিনি চেষ্টা করেছেন! তিনি সত্যিই চেষ্টা করেছেন। তিনি জানতেন এটা একটি স্কুল, তিনি জানতেন আশপাশে শিশু রয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি লড়েছেন, বিমানের গতি সরিয়ে নিতে চেয়েছেন। তিনি নিজের সব কিছু উজাড় করে দিয়েছেন।
তিনি সেই বিমানের সঙ্গে ঝরে গেছেন।’
তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে সামগ্রিকভাবে অসম্মান করবেন না। তারা আমাদের রক্ষা করে, দেশের জন্য জীবন বাজি রাখে প্রতিদিন। কিন্তু এর মানে এই না যে আমরা চুপ করে থাকব। আমাদের কঠিন প্রশ্ন করতে হবে।
আমাদের স্বচ্ছতা দাবি করার অধিকার আছে।’
এ অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘যদি কোথাও গাফিলতি থাকে, যদি কারো ভুল সিদ্ধান্ত প্রাণহানির কারণ হয়ে থাকে, তবে তাকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দোষ দিন না ককপিটে থাকা মানুষটিকে, দোষ দিন তাকে, যে জনবহুল শহরের ওপরে প্রশিক্ষণ ফ্লাইট চালানোর অনুমোদন দিয়েছে। আসল দায়িত্ব সেখানেই।’
অভিনেত্রী হিমি লিখেছেন, ‘দোষ দিন তাদের, যারা এখন পর্যন্ত আমাদের পুরনো যুদ্ধবিমান দিয়ে উড়তে বাধ্য করছে। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, কেন আমরা এখনো ১৯৬০ সালের নকশায় তৈরি এবং ২০১৩ সালে যার উৎপাদন বন্ধ হয়েছে, সেই চীনে তৈরি এফ-৭ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছি? এই বিমানগুলো শুধু পুরনোই নয়, আধুনিক শহুরে অভিযানের জন্য সম্পূর্ণভাবে অনুপযুক্ত। এগুলো ব্যবহার করে আমরা শুধু আমাদের পাইলটদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছি না, বরং নিচের অসংখ্য সাধারণ মানুষের জীবনও হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি। এটা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটা এক বিশাল ব্যর্থতা চিন্তা-ভাবনার, পরিকল্পনার এবং নেতৃত্বের। তিনি শহীদ হয়েছেন বীরের মতো। স্যালুট জানাই তোমাকে, ভাই।’