আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের ৪টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড, মুহাম্মদ ইউনূসের জরুরি বৈঠকে এ পরামর্শ আসে।
বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ মোকাবেলার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো দ্বিমত নেই। এই ঐক্যে কোনো মতপার্থক্য নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। নির্বাচনকে সামনে রেখে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহ্বান জানিয়েছে দলগুলো।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য আরও দৃশ্যমান করতে আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনীতির মাঠে মত-দ্বিমত থাকবেই, পক্ষ-বিপক্ষ বক্তব্য থাকবেই, দলগুলোর থেকে সরকারকে জানানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দেশের মানুষ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দেখতে চায়। ফ্যাসিবাদ বিরোধী প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে হতাশা বা প্রশ্ন নাই। তারা প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।’
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম মেম্বার অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বৈঠক শেষে বলেন, ‘পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে একটি গোষ্ঠী। ফ্যাসিবাদী শক্তি সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক শক্তি যেন এক থাকে তাই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সচিবালয়ের নিরাপত্তার বিষয়ে গভীর ভাবে ভাবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
গাজী আতাউর আরও বলেন, ‘সবাই একমত প্রকাশ করেছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার তাগিদ দিয়েছে। সরকারকে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে বলা হয়েছে। সব দল সরকারের পাশে থাকবে বলে একমত হয়েছে। সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারকে সহায়তা করবে বলে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।’
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। একটি মহল থেকে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা হচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষা আরও আগে বাতিল করা উচিত ছিল বলে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সরকারকে আরেকটু কঠোর হতে বলা হয়েছে।’
মোহাম্মদ তাহের আরও বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনের আগেই যেন স্থিতিশীল পরিস্থিতি ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সংস্কার ও জুলাই সনদ নিয়ে তাগিদ দেওয়া আছে। নির্বাচন বিলম্বের কোনো চেষ্টা চলছে না।’