Wednesday, August 27, 2025

বাবার সামনেই এক ভাইয়ের চোখ তুলে নিল দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

আরও পড়ুন

বরিশালের মুলাদীতে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এক ভাইকে দুই ভাই নির্মমভাবে নির্যাতন করে দুই চোখ উৎপাটন করেছে। গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) গভীর রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের ব্যাপারী বাড়িতে ওই ঘটনাটি ঘটে। তবে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয় শনিবার রাতে। এরপরই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার পর আহত রিপন ব্যাপারীকে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে শেবাচিম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার জাতীয় চক্ষু ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্তরা হলেন- ভুক্তভোগীর মেজ ভাই রোকন ব্যাপারী ও ছোট ভাই স্বপন ব্যাপারী।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ২৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই-তিনজন মিলে এক ব্যক্তিকে মাটিতে চেপে ধরে আঙুল দিয়ে তার চক্ষু উৎপাটন করছে।

আরও পড়ুনঃ  আওয়ামী লীগের হামলার আশঙ্কা, ১১ দিন সারাদেশে বিশেষ সতর্কতা জারি

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিপন দীর্ঘদিন ঢাকায় বসবাস করতেন এবং বিভিন্ন সময়ে চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালংকার সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ও ৪০ ভরি স্বর্ণ পরিবারের কাছে গচ্ছিত রেখেছিলেন বলে দাবি করে আসছিলেন। প্রায় তিন মাস আগে রিপন সেই টাকা ও স্বর্ণ ফেরত চেয়ে দুই ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধের সূচনা হয়। একাধিক সালিশ বৈঠকের পরও সমাধান হয়নি।

গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকা থেকে বাড়ি আসা রিপন সন্ধ্যায় ফের টাকা চাইলে দুই ভাইয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। রাত ১১টার দিকে বাবা আশেদ ব্যাপারী ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করেন এবং চোখ উৎপাটনের নির্দেশ দেন। বাবার নির্দেশে মেজো ও ছোট ভাই রিপনকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে চোখ উপড়ে ফেলে।

আরও পড়ুনঃ  উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: যে ৮ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে

রিপনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে শেবাচিম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার জাতীয় চক্ষু ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন।

আহত রিপন ব্যাপারী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি ঢাকায় মাদক ব্যবসার পাশাপাশি স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসাও করতেন। বাবাকে তিনি ৩৫ লাখ টাকা ও ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার দিয়েছিলেন। সেই সম্পদ ফেরত চাওয়ায় বাবার নির্দেশে মেজো ও ছোট ভাই তার চোখ উপরে ফেলেছে। তিনি ভাইদের মধ্যে সেজো। তিনি সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  নামাজ শেষে বেরিয়ে সড়কে গেল জামায়াত নেতার প্রাণ

অপরদিকে অভিযুক্ত ভাইয়েরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং জানিয়েছেন, কে বা কারা রিপনের চোখ তুলেছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না তারা।

মুলাদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে তদন্ত চলছে।

বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরেই এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। বাবা আশেদ ব্যাপারীর দুই ছেলে মিলে সেজ ছেলে রিপনের দুই চোখ উৎপাটন করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাইনি, তবে পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ