বরিশালের মুলাদী উপজেলায় গচ্ছিত টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইতে গিয়ে দুই ভাইয়ের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রিপন ব্যাপারী (৩৬) নামের এক যুবক। বাবার সামনেই তার দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মুলাদী থানার এসআই মাসুদ।
ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) গভীর রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের ব্যাপারী বাড়িতে। তবে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয় পরদিন শনিবার রাতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর। বর্তমানে গুরুতর আহত রিপন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্তরা হলেন— ভুক্তভোগীর মেজ ভাই রোকন ব্যাপারী ও ছোট ভাই স্বপন ব্যাপারী। ঘটনার পর তারা পলাতক।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে। রিপন দাবি করে আসছিলেন যে, তিনি প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণ মেজ ভাই রোকনের কাছে গচ্ছিত রেখেছিলেন। টাকা ফেরত চাইলে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয় এবং এ নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিস বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি।
শুক্রবার রাতে বাবার উপস্থিতিতে ফের ঝগড়া বাঁধে। এ সময় বাবা আশেদ ব্যাপারী ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করেন এবং চোখ উৎপাটনের নির্দেশ দেন। বাবার নির্দেশে রোকন ও স্বপন মিলে রিপনের দুই চোখ তুলে ফেলে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রিপনের ছেলে আব্দুর রহমান বলেন, আমার বাবার গচ্ছিত টাকা আর স্বর্ণ আত্মসাৎ করার জন্যই চাচারা বাবাকে অন্ধ করে দিয়েছে। আগেও তারা বাবাকে মারধর করেছে, এবার চোখই তুলে নিল।
বড় ভাই খোকন ব্যাপারী জানান, বাবার সামনেই এই ঘটনা ঘটেছে। বাবা নির্দেশ না দিলে রোকন আর স্বপন এতটা করতে পারত না।
থানা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী রিপনের বিরুদ্ধেও ঢাকায় রমনা থানায় চুরি-ছিনতাইয়ের ৮টি মামলা এবং মুলাদী থানায় হত্যা মামলাসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে মুলাদী থানার এসআই মাসুদ বলেন, ঘটনাটির পর অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, তবে তদন্ত চলছে।