রাজধানীতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং তিন দফা দাবির বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সরকারের গায়েবানা জানাজা পড়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) মাগরিবের নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরীর দুই নম্বর গেইট এলাকায় গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকায় পুলিশের হামলার প্রতিবাদে এবং প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের তিন দফা দাবিতে তারা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের শেষপর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে শিক্ষার্থীদের একাংশ সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গায়েবানা জানাজা পড়েন।
ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচির বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক ছাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইন্টেরিমের জ্ঞানবুদ্ধি লোপ পেয়েছে। তার মানে ইন্টেরিম এখন মৃত। এজন্য ইন্টেরিমের অকাল মৃত্যুতে আমরা গায়েবানা জানাজা পড়েছি। আমাদের দাবি ছিল তিন দফা। সেটা ছিল রাজপথে ছাত্রদের রক্ত ঝরার আগ পর্যন্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এখন ছাত্রদের রক্ত ঝরেছে, তাহলে আমাদের দাবি এখন চার দফা। ইন্টেরিমের পুলিশকে ছাত্রদের কাছে মাফ চাইতে হবে। হামলায় জড়িতদের বিচার করতে হবে। অন্যথায় আমরা আবার লংমার্চ টু যমুনা ঘোষণা করব।’
বিক্ষোভে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, (চুয়েট), আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারখানেক প্রকৌশল শিক্ষার্থী অংশ নেন।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে নগরীর মুরাদপুর, অক্সিজেন সড়ক, চকবাজার ও মেডিকেল সংযোগ সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। বিভিন্ন সড়কে শত, শত যানবাহন আটকে পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
প্রসঙ্গত, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে প্রকৌশলী লিখতে না দেয়া, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাউকে পদোন্নতি দিয়ে নবম গ্রেডে উন্নীত না করা এবং দশম গ্রেডের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্নাতক প্রকৌশলীদের সুযোগ দেয়া-এই তিন দফা দাবিতে মঙ্গলবার পাঁচ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হলো ‘লংমার্চ টু ঢাকা’। এর অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহবাগের মূল সড়কে অবস্থান নেন। এতে বন্ধ হয়ে যায় শাহবাগ ও আশপাশের সড়ক।
বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে রওনা দেন। তারা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মোড় পেরোনোর চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।